দেশে স্যাটেলাইট নির্ভর ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক সংযোগ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে যখন তখন বন্ধ করে দেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে থাকছে আইনসম্মত আড়িপাতার সুযোগও।
বুধবার (২৬ মার্চ) স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার বিষয়ে বিটিআরসির জারি করা নির্দেশিকায় এসব কথা বলা হয়েছে।
সরকারের টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি বুধবার “রেগুলেটরি অ্যান্ড লাইসেন্সিং গাইডলাইনস ফর নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর ইন বাংলাদেশ” নামের এই নির্দেশিকা জারি করে।
টেলিকম ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা মামুন হুসাইন অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজকে বলেন, “দেশীয় গেটওয়ে বা আইআইজিগুলোর মাধ্যমে সংযুক্ত হওয়ার ফলে এর নিয়ন্ত্রণ আসলে সরকারের হাতেই থাকবে এবং যখন তখন তা বিচ্ছিন্ন করা বা সেবা বন্ধ করা সম্ভব হবে সরকারের পক্ষে।”
নির্দেশিকার ১৬তম সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস অধ্যায়ে বলা হয়েছে, এই ব্যবস্থায় লিগ্যাল ইন্টারসেপশনের (আইনানুগ আড়িপাতা) ব্যবস্থা থাকবে। কোম্পানিগুলোর সিস্টেম এলআই কমপ্লায়েন্ট হতে হবে, অর্থাৎ সিস্টেমে আড়িপাতার মতো ব্যবস্থা রাখতেই হবে।
নির্দেশিকার নেটওয়ার্ক ও অপারেশন অধ্যায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে সেবা দিতে লাইসেন্সধারীকে অন্তত একটি গেটওয়ে দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে। লাইসেন্সধারী তার এনজিএসও গেটওয়ে দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে বা আইআইজি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত করে ইন্টারনেট ট্রাফিক পরিবহন করবে।
স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কি? কীভাবে কাজ করেস্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কি? কীভাবে কাজ করে
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্যাটেলাইট নির্ভর ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রথমে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। তারপর বিটিআরসির কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি পাঁচ লাখ টাকা। লাইসেন্সের জন্য সিকিউরিটি ডিপোজিট দিতে হবে আড়াই কোটি টাকা। লাইসেন্স দেওয়া হবে ১০ বছরের জন্য। বার্ষিক ফিও দিতে হবে।
যারা স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে শুধু আইওটি সার্ভিস দেবেন, তাদের জন্য বার্ষিক ফি ১০ হাজার ডলার। আর যারা স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড এবং অন্যান্য সেবা দেবেন, তাদের বার্ষিক ফি ৩০ হাজার ডলার।
৯ এপ্রিল দেশে ইলন মাস্কের স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক ব্যবহার৯ এপ্রিল দেশে ইলন মাস্কের স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক ব্যবহার
স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার লাইসেন্সধারী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, আইওটি, মেশিন টু মেশিন কমিউনিকেশন, আর্থ স্টেশন ইন মোশন সেবার পাশপাশি বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে নতুন সেবা দিতে পারবেন। তবে ব্রডকাস্টিং বা ডিটিএইচ সেবা, টেরিস্ট্রিয়াল বা স্যাটেলাইটভিত্তিক টেলিফোন বা আইএমটি সেবা দিতে পারবে না এই লাইসেন্সধারী।
জানা গেছে, দেশে এখন বিটিআরসির লাইসেন্সধারী ৩৪টি আইআইজি বা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে কোম্পানি রয়েছে।
এসএন