শোলাকিয়ার মুসল্লিদের জন্য দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার ১৯৮তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর এ ঈদগাহ মাঠে আশপাশের জেলা ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক লাখ মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও শোলাকিয়ার মুসল্লিদের জন্য সুখবর দিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশ নিতে দুটি স্পেশাল ট্রেন থাকছে মুসল্লিদের জন্য। এর মধ্যে একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে নামাজ শেষে আবার ময়মনসিংহে ফিরে যাবে। অন্যটি ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ এসে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে আবার ভৈরবে ফিরে যাবে।

ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফোজিয়া খান ও কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার খলিলুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জংশন থেকে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে বিশেষ একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ছেড়ে সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছাবে। শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত শেষে ওই ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে দুপুর ১২টায় ছেড়ে বিকেল ৩টায় ময়মনসিংহে পৌঁছাবে। ট্রেনটি চলাচলের পথে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটের শম্ভুগঞ্জ, বিসকা, গৌরীপুর, বোকাইনগর, ঈশ্বরগঞ্জ, সোহাগী, আঠারবাড়ী, নান্দাইল রোড, মুসুল্লি, নীলগঞ্জ স্টেশনে দুই মিনিট করে যাত্রাবিরতি করবে।

অপরদিকে ভৈরব জংশন থেকে ভোর ৬টায় আরেকটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন কিশোরগঞ্জ অভিমুখে ছেড়ে সকাল ৮টায় পৌঁছাবে। নামাজ শেষে আবার দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ ছেড়ে দুপুর ২টায় ভৈরব পৌঁছাবে। পথে কালিকাপ্রসাদ, ছয়সূতি, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, সরারচর, হালিম মকসুদপুর, মানিকখালী, গচিহাটা ও যশোদল স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ ঈদের জামাতে যেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুসল্লিরা অংশ নিতে পারেন এজন্য প্রতি ঈদে এমন বিশেষ ট্রেন চালু করে আসছে রেলওয়ে বিভাগ।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী জানান, এবারও পূর্বের সকল বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে শোলাকিয়ায়। আমাদের পুলিশের ১১ শত সদস্য থাকবে নিরাপত্তার কাজে। ২০১৬ সাল থেকে আমরা সব সময় বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছি।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া পুরো মাঠ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। যা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারে তাই আমাদের এই আয়োজন। এর মধ্যে ইদগাহ ময়দানকে লক্ষ্য করে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষ যখন ঈদগাহ ময়দানে আসবেন পুলিশের চারটি স্থাপনা পেরিয়ে আসতে হবে। সেটি চেকপোস্ট হোক বা পিকেট হোক। আবার কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয়টি স্থাপনা পেরিয়ে ময়দানে আসতে হবে। এখানে ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে ছয়টি। তার মধ্যে র‌্যাব ব্যবহার করবে দুটি আর চারটি ব্যবহার করবে পুলিশ। মাঠে চারটি ড্রোন ক্যামেরা থাকবে। থাকবে ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা। এছাড়া পুরো মাঠ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। যা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।

ঈদগাহ ময়দান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, এবারও ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবারের ঈদের জামাতে মাস্ক, টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না মুসল্লিরা।

তিনি আরও বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন ভৈরব-কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আসা যাওয়া করবে। দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।

এফপি/এস এন


Share this news on: