ঈদ মানে খুশি। তবে এমন খুশির দিনে পানিতে ভেসে গেছে সাতক্ষীরা উপকূলের সব ঈদ আনন্দ। কারণ আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবে) বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল পৌনে ৯টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এদিকে হঠাৎ করে বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ফলে ঈদের আনন্দ গ্রামবাসীর নিরানন্দে পরিণত হয়েছে। সকালে স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন পয়েন্টে বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা তাহলেও তা ব্যর্থ হয়।
বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে আমরা গ্রামবাসীরা সবাই পৃথকভাবে ঈদের নামাজ আদায় ব্যস্ত ছিলাম। নামাজ শেষে জানতে পারলাম আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার দিয়ে দ্রুত লোকজনকে ভাঙন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করলেও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায় তা ব্যর্থ হয়েছে।পানিতে ভেসে গেল উপকূলের ঈদ আনন্দ
তিনি বলেন, ভাঙন পয়েন্টে দ্রুত একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে দুপুরের জোয়ারে বিছট গ্রামসহ আশপাশের ৭-৮টি গ্রাম খোলপেটুয়া নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়বে।
তিনি দ্রুত ভাঙন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ মেরামতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট এলাকাজুড়ে সম্পূর্ণ খোলপেটুয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হবে কিনা বলা যাচ্ছে না।
সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে সেখানে কাজ করছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এমআর/এসএন