ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে রাতভর ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ আহত ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত মো. দুলালের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয়।
অভিযুক্তকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করায় মজিদ নামের এক সহযোগিকে উত্তেজিত জনতা মারধর করে। এসময় মজিদের বাড়ি ও তার ভাই আতিকের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। আসামি পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগে মজিদকে আটক করে পুলিশ।
সোমবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাতে উপজেলায় একটি গ্রামে ওই শিশুকে ধর্ষণ ও পরদিন মঙ্গলবার ওই শিশুকে বাড়িতে ফিরে গেলে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার মন্নেছ আলীর ছেলে মো. দুলাল তার পাশের বাড়ির ৯ বছর বয়সী শিশু ছাত্রীকে ঈদের দিন বিকেলে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা বলে নিজের শিশু মেয়েকে দিয়ে ফুসলিয়ে ডেকে নেয়। পরে নিজের মেয়েকেসহ ওই শিশুকে নিয়ে ঈদের দিন (সোমবার) বিকেলে শ্বশুর বাড়িতে যায়। এরপর নিজের মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে ওই শিশুকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে।
পরে মঙ্গলবার সকালে ওই শিশুকে একটি ভ্যানে করে অসুস্থ অবস্থায় তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। দুলাল তাকে রাতভর ধর্ষণ করেছে বলে অসুস্থ শিশুটি তার পরিবারকে জানায়। এসময় পরিবারের লোকজন দুলালকে আটক করতে গেলে স্থানীয় মজিদ দুলালকে ভাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে ভিকটিককে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। অভিযুক্ত দুলাল পালিয়ে যায়। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী ধর্ষকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে জনতা আসামিকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অভিযোগে আব্দুল মজিদকে আটক করতে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা মজিদের দোকান ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
ভিকটিমের বড় বোন জানান, দুলাল ঈদের দিন বিকেলে তার নিজের মেয়েকেসহ ভিকটিম শিশুটিকে নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। পরে সারা রাত আমরা আমাদের বোনের কোনো সন্ধান পাইনি। মঙ্গলবার সকালে দুলাল আমার বোনকে নিয়ে আসে। তখন আমরা দেখি আমাদের বোন খুবই অসুস্থ। পরে সে জানায় দুলাল তাকে ধর্ষণ করে। এসময় আমার ভাইয়েরা দুলালকে ধরতে গেলে আতিক আর মজিদ দুলালকে সরিয়ে দেয়। বিষয়টি দেখছি বলে মজিদ আমার ভাইদের উল্টো সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর পুলিশ এসে মজিদকে ধরে নিয়ে যায়।
মুক্তাগাছা থানার ওসি (তদন্ত) রিপন চন্দ্র গোপ জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে মূল অভিযুক্তকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করায় মজিদ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। ভিকটিম শিশুটিকে চিকিৎসা ও মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মূল অভিযুক্ত দুলাল পালিয়েছে। তাকে আটক করাসহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
এসএন