রাজশাহীর বাগমারায় চায়ের দোকানে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হওয়ার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অভিযোগ রয়েছে, আবদুর রাজ্জাক (৩৫) নামে ওই যুবককে হত্যার পর ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যদের সামনেই অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম (২২)–কে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে হামলার শিকার হন পুলিশের সদস্যরাও, এতে উপপরিদর্শকসহ ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে বাগমারা উপজেলার ঝিকড়ার রনশিবাড়ি বাজারে ঘটে এ ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, এদিন বিকেলে আবদুর রাজ্জাক রনশিবাড়ি বাজারের নজরুলের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একই গ্রামের আমিনুল ইসলাম (২২) দোকানের ভেতরে ঢুকে আবদুর রাজ্জাককে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে আহত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন আমিনুল ইসলাম।
স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে আমিনুলকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে তিনি রনশিবাড়ি গ্রামের আবদুর রশিদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ক্ষুব্ধ লোকজন বাড়িটি ঘিরে রাখেন। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। তবে লোকজনের বাধায় ব্যর্থ হয় সেই চেষ্টা। লোকজন কয়েক দফা বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা চালান। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে পুলিশকে চলে যেতে বলেন।
একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্ষুব্ধ লোকজন বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে উপপরিদর্শক সাদিকুল ইসলামসহ পুলিশের ছয় সদস্যকে লাঞ্ছিত ও মারধর করে ভেতরে ঢুকে পড়েন তারা। এরপর বাড়ি থেকে বাইরে নিয়ে এসে মারধরের এক পর্যায়ে ওই তরুণকে মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ছুরিকাঘাতে একজন নিহত হওয়ার খবর আসে বিকেলের দিকে। ঘটনাস্থল বাগমারা হলেও নিহত ব্যক্তির বাড়ি আত্রাইয়ের গোয়ালবাড়ি গ্রামে। খুনের সঙ্গে জড়িত তরুণের বাড়িও একই গ্রামে। পরে পুলিশকে মারপিট করে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা ওই তরুণকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে ও মাথায় ইট দিয়ে থেঁতলে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
আরএ/টিএ