এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নবম এশিয়ান শীতকালীন গেমস ঘিরে সাইবার হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) তিন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে চীন। দেশটির হারবিন শহরের পুলিশ সামাজিক মাধ্যম উইবোতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেছে।
অভিযুক্ত হিসেবে তিন মার্কিন নাগরিকের নাম প্রকাশ করা হয়েছে—ক্যাথেরিন এ. উইলসন, রবার্ট জে. স্নেলিং এবং স্টিফেন ডাব্লিউ. জনসন। তারা সবাই এনএসএ’র সাইবার যুদ্ধবিষয়ক গোয়েন্দা ইউনিট ‘অফিস অব টেইলার্ড অ্যাকসেস অপারেশনস’-এ কাজ করেন বলে জানানো হয়েছে।
চীনের কম্পিউটার ভাইরাস পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, ২৬ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত—গেমসের আগে ও চলাকালীন সময়ে—হারবিন শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বিদেশি সাইবার আক্রমণের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হামলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।এই হামলার লক্ষ্য ছিল তথ্য প্রচার ব্যবস্থা, আগমন ও প্রস্থানের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা, কার্ড পেমেন্ট সিস্টেম ও স্থানীয় অবকাঠামো।
মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেছে, এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের কাছে বিভিন্নভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করছি, চীনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দোষারোপ ও হামলা বন্ধ করুক। তিনি আরও জানান, বেইজিং নিজেদের সাইবার নিরাপত্তা রক্ষায় ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেবে।
বেইজিংয়ে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
হারবিন পুলিশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্ত এনএসএ কর্মকর্তারা চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সিস্টেমেও হামলা চালিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সাল থেকে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু দেখিয়ে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে।
এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, তদন্তকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ভার্জিনিয়া টেক-কে এই ‘সমন্বিত সাইবার হামলা অভিযানে’ জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিনজনের খোঁজ দিতে পারলে এবং তাদের গ্রেফতারে সহায়তা করলে পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে কী ধরনের পুরস্কার দেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। চীনে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য জানালে অর্থমূল্য প্রদানের নিয়ম রয়েছে।
চীনের আইন অনুযায়ী, যারা গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন, তাদের কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে। গত মার্চে দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের দায়ে এক সাবেক প্রকৌশলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এমআর/টিএ