চলমান গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেছেন, বিদ্যমান সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আমরা আশা করছি, এই গ্রীষ্মকালে বিদ্যমান সব বিদ্যুৎকেন্দ্র চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
রোববার (২০ এপ্রিল) তিনি বাসসকে এ কথা বলেন।
বিপিডিবি চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যেখানে দৈনিক চাহিদা আনুমানিক ১৫ হাজার মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ চাহিদা ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বলে অনুমান করা হয়েছে, যেখানে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট।
বিপিডিবির তথ্য অনুসারে, শনিবার (১৯ এপ্রিল) দেশে ১১ হাজার ৯৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে, যেখানে চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৪৫১ মেগাওয়াট। রোববার কর্মদিবস হওয়ায় চাহিদা প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিপিডিবি সূত্র জানিয়েছে, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের ঘাটতি ৭৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত থাকবে। তবে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি সমস্যার কারণে বিদ্যুৎবিভ্রাট হতে পারে।
বিপিডিবি গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, যেখানে সর্বোচ্চ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৭ হাজার ২৬০ মেগাওয়াট।
এছাড়া, সরকার গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সংগ্রহ করছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ও দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে গত ১৭ এপ্রিল সরকার আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
এর আগে মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের মেসার্স এক্সেলেরেট এনার্জি, এলপি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
এভাবে সরকার প্রায়ই এলএনজি সংগ্রহ করে থাকে। অন্যদিকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি নিয়ে কাতার ও ওমানের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি রয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, গ্রীষ্মকালে লোডশেডিং কমাতে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। গ্রীষ্মকালে সারা দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সরকার কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে সরকারি অফিস, ব্যাংক, বাড়ি ও মসজিদে এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা উচিত নয়। যদি এটি বজায় রাখা যায়, তাহলে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
তিনি বলেন, শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে জাতীয় বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে।
লোডশেডিং সম্পর্কে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, সরবরাহ ও চাহিদায় অমিলের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। কিন্তু যদি ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে যায় অথবা ঝড় ও বৃষ্টিপাতের কারণে কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দেয়, তাহলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।
এসএন