রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রথমবারের মতো সরাসরি শান্তি আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত কয়েক বছরে এ ধরনের প্রস্তাব এই প্রথম এসেছে। পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে পুতিন এমন ঘোষণা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে ইউক্রেন একটি প্রতিনিধি দল লন্ডনে পাঠাচ্ছে। সম্প্রতি প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের ধারাবাহিকতায় বুধবার লন্ডনে এই আলোচনা হবে। সেখানে টেকসই শান্তির পথ খোঁজা হবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
পুতিন রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ইস্টার উপলক্ষে ঘোষিত ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হলেও, রাশিয়া এখনো শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত। তবে ইউক্রেন এবং রাশিয়া—উভয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট চান, ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা হোক এবং বেসামরিক স্থাপনায় হামলা বন্ধে পারস্পরিক সমঝোতা হোক। তিনি বলেন, ‘আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে, এখন কিয়েভের সদিচ্ছার প্রয়োজন।’
জেলেনস্কি এ বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও এক্সে (আগের নাম টুইটার) লিখেছেন, ‘যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠনমূলকভাবে এগোচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য শর্তহীন যুদ্ধবিরতি ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি।’ তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি হলে আমরাও থামব, হামলা হলে পাল্টা জবাব দেব। কথার চেয়ে কাজ বড়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অগ্রগতি না হলে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার টেবিল ছেড়ে দিতে পারে। তবে ট্রাম্প আশাবাদ জানিয়ে বলেন, এই সপ্তাহেই হয়তো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। যদিও রাশিয়া এখনো ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে ইউক্রেন বলছে—এটি আত্মসমর্পণের নামান্তর এবং ভবিষ্যতে দেশকে অরক্ষিত করে ফেলবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির দিন রবিবার ইউক্রেনে বোমা হামলার সতর্কতা না থাকলেও ৩ হাজারের মতো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও বলছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী তাদের অবস্থানে ৪৪৪ বার হামলা চালিয়েছে এবং ৯০০’র বেশি ড্রোন হামলা হয়েছে।
তবে এসব তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এমআর/টিএ