ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে জামায়াতের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
 
তিনি বলেছেন, বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
 
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মী নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতের অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুনর্গঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে এটা আমরা আশা করি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।
 
আমরা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে চাই। কেউ যাতে নিপীড়নের মুখে না পড়ে এমন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই উল্লেখ আলী রীয়াজ বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ যারা তৈরি করে দিয়েছেন, বীর শহীদরা, তাদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেনো এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচারবর্হিভূত ব্যবস্থার মধ্যে যেনো তাকে মোকাবিলা করতে না হয়। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল। তারই অংশ হিসেবে অন্তর্বতী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সবাই একত্রে আছি। সকলে মিলে আমরা এই চেষ্টাটা করছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, এটা সবার বিষয়। জাতির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।

মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

এমআর/এসএন


Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪০-এ পা দিয়েও দুর্দান্ত ফর্মে ডু প্লেসি, গড়লেন বিশ্বরেকর্ড Jul 01, 2025
img
একক কনসার্টে গাইবেন বাপ্পা মজুমদার Jul 01, 2025
img
ফোনকল ফাঁসের ঘটনায় বহিষ্কার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী Jul 01, 2025
img
আমার বিশ্বাস রিয়ামনি আর এমন ভুল করবে না: হিরো আলম Jul 01, 2025
‘১৪০০ শহীদ আন্দোলনের সবচেয়ে বড় মাস্টারমাইন্ড’ Jul 01, 2025
img
৫ লাখ ‘ওয়ার্ক পারমিট ভিসা’ দেওয়ার ঘোষণা ইতালির Jul 01, 2025
img
খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রপতি করার দাবি জানালেন পিনাকী! Jul 01, 2025
img
মায়ামি ছাড়ছেন মেসি, গন্তব্য ইউরোপ! Jul 01, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামীকাল বুধবার: নৌ উপদেষ্টা Jul 01, 2025
img
শাহজালাল বিমানবন্দরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা, স্ক্যানিংয়ে কড়াকড়ি Jul 01, 2025
আসছে জুলাই ঘোষণা: স্থগিত হতে পারে সংবিধান, সরকারে রথবদলের ইঙ্গিত Jul 01, 2025
img
চট্টগ্রামের সাবেক ডিআইজিসহ আরও ৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত Jul 01, 2025
img
ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কিরকুক বিমানবন্দরে রকেট হামলা Jul 01, 2025
img
অভিনয় থেকে দুই মাস দূরে থাকবেন জোভান Jul 01, 2025
img
নির্বাচনী বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কার্পণ্য করা হবে না: অর্থ উপদেষ্টা Jul 01, 2025
img
শিগগিরই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে যাচ্ছে ইরান: আব্বাস আরাঘচি Jul 01, 2025
‘আমরা একদলীয় দেশের বাসিন্দা’: ইলন মাস্ক Jul 01, 2025
img
উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল ফ্রান্স Jul 01, 2025
img
সব আওয়ামী লীগারেরাই মেন্টালি সিক, তাদের থেরাপি ও রিহ্যাবে পাঠানোর পরামর্শ পিনাকির Jul 01, 2025
img
সবচেয়ে বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হজ আয়োজন ২০২৫ সালে Jul 01, 2025