ক্যাথলিক চার্চের জ্যেষ্ঠ নেতা কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া তোমাসি ও কার্ডিনাল জ্যাকব কুভাকাদ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রোমে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরপরই এই বৈঠক দুটি অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক ইউনূসের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, দুই কার্ডিনাল পোপ ফ্রান্সিসের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জন্য আজীবন কাজের স্মৃতিচারণ করেন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে অধ্যাপক ইউনূসের অবদান গভীরভাবে প্রশংসা করেন। তারা ইউনূসকে পোপ ফ্রান্সিসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেও উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ধর্মীয় ভিন্নতার ঊর্ধ্বে উঠে পোপ ফ্রান্সিস সবার জন্য আলিঙ্গনযোগ্য নেতা ছিলেন। তিনি পোপের সঙ্গে তার বহু সাক্ষাৎ এবং ভ্যাটিকান ব্যাংক সংস্কারে তার ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন। ইউনূস জানান, তিনি ব্যাংকটিকে দরিদ্রবান্ধব করতে একটি সমালোচনামূলক চিঠি লিখেছিলেন, যা পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানের সরকারি পত্রিকায় প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূস আরও জানান, পোপ তাকে ভ্যাটিকানের ব্যাংক ব্যবস্থার সংস্কার ও দরিদ্রবান্ধব প্রকল্প সম্প্রসারণে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ভ্যাটিকানে তাদের যৌথ উদ্যোগে 'থ্রি জিরো ক্লাব' গঠিত হয়েছে, যার লক্ষ্য হলো শূন্য বেকারত্ব, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য নেট কার্বন নির্গমন।
কার্ডিনাল তোমাসির সঙ্গে বৈঠকে ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়। ইউক্রেন ও গাজার সংঘাতের অবসানে পোপের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন উভয় নেতা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্রুত উন্নয়ন ও শান্তি বজায় রাখার গুরুত্বও তারা উল্লেখ করেন। অধ্যাপক ইউনূস ভিয়েতনামের দ্রুত উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনুরূপ প্রচেষ্টার কথা জানান।
অন্যদিকে, কার্ডিনাল কুভাকাদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং আন্তঃধর্মীয় সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ইউনূস। কার্ডিনাল কুভাকাদ জানান, সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারের এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ, ভ্যাটিকানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আরিফুল ইসলাম এবং ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রোকিবুল হক।
এসএস/এসএন