কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে জামায়াতের বিকল্প নাই : গোলাম পরওয়ার

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিকল্প নাই, বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। জামায়াত সমাজ ও রাষ্ট্রের সব স্তরে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে চায়। জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন।

গত রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনা জেলার ফুলতলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ উপলক্ষ্যে সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে, বিকেল সাড়ে ৩টায় খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে থানা আমির ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে খানজাহান আলী কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন খানজাহান আলী থানা জামায়াতের সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুন।

সমাবেশে তিনি বলেন, রাসুল (সা.)-এর যুগে আম্মাজান আয়েশা (রা.)সহ অনেক নারী সাহাবী ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। হজরত সুমাইয়া (রা.) শাহাদাৎ বরণ করেছেন। সুতরাং আপনারাও নামাজ-রোজার পাশাপাশি একটি শান্তি ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লার প্রতিটি ঘরে ঘরে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত পৌঁছে দেবেন। এখন আর ঢাল-তলোয়ার-সড়কির যুদ্ধ নাই, এখন হলো ব্যালোটের যুদ্ধ। জাতীয় সংসদে যদি আল্লাহ ভীরু সৎ, যোগ্য ও দক্ষ লোক পাঠানো যায় তাহলে দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। তাই আগামী নির্বাচনে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দানের মাধ্যমে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ২ হাজারের অধিক আমাদের সোনার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা, আয়না ঘরে গুম ক্রসফায়ারসহ সমস্ত হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিল শেখ হাসিনা। একথা দেশ এবং সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানে গণহত্যার শিকার হয়েছে বহু মানুষ এবং আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা।

তিনি বলেন, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান জামায়াত নেতাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এত নিষ্ঠুর এবং ফ্যাসিস্ট যে, তার ক্ষেত্রে শুধু ফ্যাসিস্ট শব্দটি প্রযোজ্য নয়। বরং তিনি একজন ‘স্যাডিস্ট’। ইংরেজিতে তাকেই ‘স্যাডিস্ট’ বলা হয়, যার পাষাণ হৃদয় খুন, গুম, নিষ্ঠুরতা এবং রক্তপাত দেখে একটুও কাঁপে না, বরং এটা উপভোগ করে।

তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন মহল থেকে জালিম শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য, রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের এ ষড়যন্ত্র দেশবাসী যে কোনো মূল্যে রুখে দেবে. ইনশাআল্লাহ। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশা। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই অর্থবহ নির্বাচন দিতে হবে। দল-মত-নির্বিশেষে পুরো জাতিকে এক হতে হবে। সাম্প্রদায়িক হানাহানি, বিশৃঙ্খলা দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে আছি আমরা।

ফুলতলা উপজেলা আমির অধ্যাপক আ. আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, যুব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ।

উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, কর্মপরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি শেখ মো. আলাউদ্দিন, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. আজিজুল হক, উপজেলা পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, দামোদর ইউনিয়ন আমির ইঞ্জিনিয়ার শাব্বির আহমদ, ফুলতলা ইউনিয়ন আমির মাস্টার মফিজুল ইসলাম, জামিরা ইউনিয়ন আমির মো. শরিফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুর রহিম খান, সেক্রেটারি মো. মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, অমুসলিমসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তি বর্গ সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আরএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশে মুজিববাদীদের কোনো ঠাঁই হবে না: নাসীরুদ্দীন Jul 17, 2025
img
কাচ ভেঙে শাহরুখের চেহারা বানিয়ে চমকে দিলেন তার ভক্ত! Jul 17, 2025
img
হামলাকারী কেউ যেন ছাড় না পায় : নাহিদ Jul 17, 2025
img
পঞ্চগড়ের দুই সীমান্তে নারী-শিশুসহ ২৪ জন পুশইন Jul 17, 2025
img
এই সিরিজ জয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ : নাফিস Jul 17, 2025
img
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর রাজনৈতিক ভাষায় কথা হবে না : শিশির Jul 17, 2025
img
গোপালগঞ্জ এখন শান্ত রয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 17, 2025
img
ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন Jul 17, 2025
img
দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার ইস্তাম্বুলের মেয়র, তুরস্কে বিক্ষোভ Jul 17, 2025
img
কোনো চাপে নয়, বিভ্রান্তি এড়াতেই ওয়েবসাইট থেকে নৌকা প্রতীক সরানো হয়েছে : ইসি Jul 17, 2025
img
গোপালগঞ্জের ঘটনার আগাম তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে ছিল না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 17, 2025
img
১২ দিন প্রচণ্ড শীতে, পানিতে ভিজে রাতভর শুটিং করেছি : অপরাজিতা Jul 17, 2025
img
নির্বাচন পেছানো হলে দেশ অবনতির দিকে যাবে: আমীর খসরু Jul 17, 2025
img
গোপালগঞ্জের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিলেন সোহেল তাজ Jul 17, 2025
img
সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন থাকলে শাকিবকে করুন: মিষ্টি জান্নাত Jul 17, 2025
img
মায়ামির অধিনায়কের দায়িত্বে সাকিব Jul 17, 2025
img
গোপালগঞ্জের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার Jul 17, 2025
img
‘চাঁদাবাজদের সামলান, নাহলে জনগণ ফ্যাসিস্টদের মতো বিতাড়িত করবে’ Jul 17, 2025
img
জুলাই স্মরণে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হবে অনুষ্ঠান Jul 17, 2025
img
বেকারত্ব দূর করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ : আসিফ মাহমুদ Jul 17, 2025