চাঁপাইনবাবগঞ্জে হলুদ তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রোকনপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রথমবারের মতো হলুদ তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন সাহীন আলম নামের এক কৃষক। অমৌসুমে কম খরচে বেশি দামে বিক্রির আশায় তিনি এই চাষ শুরু করেন, যা ইতোমধ্যে এলাকাজুড়ে কৌতূহল ও আগ্রহ তৈরি করেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এসএসসিপি রেঞ্জ প্রকল্পের আওতায় সাহীন আলম ৬৬ শতক জমিতে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় হলুদ তরমুজের চাষ করছেন। কৃষি অফিস থেকে তাঁকে চাষাবাদের প্রশিক্ষণ, বীজ, সার ও মালচিং পেপার সরবরাহ করা হয়। এ জাতের তরমুজ দেখতে বাইরে থেকে হলুদ হলেও ভেতরে টকটকে লাল ও রসে ভরপুর, স্বাদেও বেশ মিষ্টি। মৌসুমের বাইরে হওয়ায় এর বাজারমূল্যও বেশি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জমিতে মালচিং পেপার ব্যবহার করে মাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। বাঁশের খুঁটি ও দড়ির সাহায্যে তৈরি মাচার ওপর ঝুলছে ছোট-বড় অনেক তরমুজ। ফলন দেখে আশাবাদী কৃষক সাহীন আলম জানান, গত বছর মাত্র ১.৫ শতকে পরীক্ষামূলকভাবে এই জাতের তরমুজ চাষ করেছিলেন, যেখানে ৬৫-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে পেরেছিলেন। এবার ৬৬ শতকে চাষ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো আয়ের আশা করছেন তিনি—যদি কাঙ্ক্ষিত দাম পান।

সাহীনের ছেলে মেহেদী হাসান জানান, সবুজ তরমুজের তুলনায় হলুদ তরমুজের বাজারদর বেশি এবং ফলনও ভালো, তাই ভবিষ্যতেও এই চাষ অব্যাহত রাখতে চান তারা। একই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষক নূরনবীও, যিনি জানান, হলুদ তরমুজের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে নিজেও এই জাতের তরমুজ চাষের পরিকল্পনা করছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গাণিউল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রকল্পভুক্ত সাহীন আলমকে প্রদর্শনীর আওতায় সহযোগিতা করেছি এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াসিন আলী বলেন, “গোল্ডেন ক্রাউন্ট নামের এই জাতটি আকারে ছোট, বাইরে হলুদ ও ভেতরে গোলাপি। এটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং অমৌসুমে চাষযোগ্য হওয়ায় বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। আমরা এ জাতের আবাদ আরও বিস্তারে কাজ করছি।”


এসএস/এসএন

Share this news on: