ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের জন্য অপপ্রচার ছড়ানো বা সাধারণ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা নতুন কিছু নয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংবাদমাধ্যমের তুলনায় তাদের সংবাদ উপস্থাপনার ধরন বেশ আলাদা।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় অনেক সময় সাংবাদিকদের অতিরিক্ত উত্তেজিত হতে, চিৎকার করতে, এমনকি লাফাতে বা দৌড়াতেও দেখা যায়—যা এক ধরনের নাটকীয়তা তৈরি করে।
সম্প্রতি যুদ্ধ আবহে এমন নানা নজির দেখিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। আর তা নিয়ে রীতিমতো হাসাহাসি করছেন নেটিজেনরা। তারকাঅঙ্গনও একরকম বিরক্ত ভারতীয় মিডিয়ার এহেন কর্মকাণ্ডে।
আবার কয়েকদিন আগে বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সরাসরি সার্কাস বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। তাদের সংবাদ পরিবেশনের ধরন দেখে যে অভিনেত্রী বিরক্ত, তা প্রকাশ করতে একটু দ্বিধাবোধ করেননি। অভিযোগ তোলেন যতসব ভুয়া ফুটেজ, ছবি দিয়ে তথ্যবিভ্রাট, অতিনাটকীয় শব্দগঠন ও সংবাদ কর্মীদের চিৎকার-চ্যাঁচ্যামেচির দিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর।
আদতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে ভারতের নানা মিডিয়ায় অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। এমন উত্তপ্ত আবহের সুযোগ নিতে গিয়ে ইন্টারনেট থেকে নেওয়া কিছু ভুয়া ভিডিও ও ছবি নিয়ে সেদেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো পাকিস্তানে হামলার দৃশ্য বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে বিপাকেও পড়েছে সেই মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলো। মূলত তা নিয়েই সোনাক্ষী সিনহা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিয়ে এমন তোপ দাগেন। এবার একই বিষয় নিয়ে মিডিয়ার ওপর তোপ দাগলেন ওপার বাংলার অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী; রসিকতা ও সমালোচনা করতে করতে ভারতীয় গণমাধ্যমকে রীতিমতো ধুয়ে দিলেন অভিনেতা।
সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ঋত্বিক লেখেন, ‘আমাদের এখানে নিউজ চ্যানেল গুলো কি ভালো ফিকশান কন্টেন্ট বানাচ্ছে!’
নেটিজেনরাও তার মন্তব্য ঘরে অভিনেতার সঙ্গে তাল মেলান। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘প্রতিটি ছায়াছবির ভিএফএক্স, সঞ্চালকের অভিনয় এবং সাইরেনের আবহসংগীত মন কাড়ছে। আপামর জনগণকে বাংলা নিউজ ইন্ডাস্ট্রির পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।’ আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘তাও ভিডিও গেম এর ফুটেজ দিয়ে।’
নেটিজেনদের এসব মন্তব্য বেশ উপভোগ করছিলেন ঋত্বিক। তাই তো সমালোচনা বা এই রসিকতা শুধু একটি পোস্টেই সীমাবদ্ধ রাখেননি অভিনেতা। যেমন এক নেটিজেনের মন্তব্য ছিল, ‘বিভিন্ন রকম ওয়ার স্ট্র্যাটেজি থাকে ... বাটনটা মিউজিক ডিরেক্টরের হাতে থাকলেই ভালো না? যদিও শ্রোতা - দর্শকদের সমালোচনা করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে।’
উত্তরে ঋত্বিকের মন্তব্য, ‘মিউজিক ডিরেকশান আর ভিএফএক্স-এ ক্রিয়েটিভিটির অভাব থাকলেও সঞ্চালকের প্রাণঢালা অতি-অভিনয় মনে রাখবো অনেক দিন।’ আবার অভিনেতার এই মন্তব্যের উত্তরে এক নেটিজেন লেখেন, ‘এবং অতি চিৎকার...’ প্রত্যুত্তরে আরেক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘আর কি স্বরক্ষেপন! মনে হচ্ছে না স্টুডিওতে, যেন খোলা মাঠে খবর শোনাচ্ছে, না চ্যাঁচালে কেউ শুনতে পাবে না।’
আরেক নেটিজেন লেখেন, ‘জল ঘোলা, মাছও প্রচুর, মিডিয়ার দোষ নেই।‘ সেখানেও উত্তর দেন ঋত্বিক। বলেন, ‘জল ঘোলা, প্রচুর মাছ, আর মিডিয়া চন্দনে চোবানো তুলসীপাতা।’
তবে মিডিয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ ঋত্বিকের জন্য নতুন নয়। এর আগে মলম বিক্রেতা খ্যাত সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জনের ওপর তোপ দাগিয়েছিলেন অভিনেতা। সামাজিক মাধ্যমে তাকে ‘গাধা’ বলে মন্তব্য করেন। যদিও নেটিজেনরা অভিনেতার এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত হন।
আরএ/এসএন