বাইক দুর্ঘটনায় হবু স্বামীর মৃত্যু, আত্মহত্যা করলেন তরুণী

আসছে ঈদুল আজহার পরেই বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল জিনাত এবং আলি আকবরের। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় আলির। হবু স্বামীর মৃত্যুর শোক সামলাতে না পেরে আলির মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আত্মহত্যা করলেন জিনাত। তার আগে বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ করে জানালেন ‘গুড বাই’।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর এলাকার একবালপুরে ঘটেছে এ ঘটনা। ২০ বছর বয়সী জিনাতের বাড়ি একবালপুর থানার ভূকৈলাশ রোডে। ১১ বছরের ভাইয়ের সঙ্গে একই ঘরে থাকতেন জিনাত।

বুধবার সকালে ভাই ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায়, বিছানার ওপর সিলিং ফ্যানে গলায় ওড়না প্যাঁচানো বোনের প্রাণহীন দেহটা ঝুলছে।

আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ছেলের চিৎকারে জিনাতের মা পাশের ঘর থেকে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় এসএসকেএম হাসপাতালে।

পুলিশ আত্মহত্যার তদন্তে নেমে আলি আকবরের কথা জানতে পারে। গত বছর দুয়েক ধরে জিনাত এবং আলির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক।

জিনাতের বন্ধুরা পুলিশকে জানায়, দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক চলছে আলি ও জিনাতের। তাদের সঙ্গে কয়েক বার দেখাও হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর পড়াশোনা বন্ধ করেছিলেন জিনাত। তার বাবার মৃত্যু হয়েছে আগেই। কয়েক মাস আগেই পাশের হোসেন শাহ রোডের বাসিন্দা আলি আকবর ওরফে রাহুলের সঙ্গে বিয়ের কথা পাকা হয়। ঠিক হয় আগস্টে কোরবানি ঈদের পরই বিয়ে হবে।

পুলিশ জানায়, রোববার রাতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় আলি। ভর্তি করা হয় এসএসকেএমে। বুধবার রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। খবরটা পৌঁছায় জিনাতের কাছে।

আলির মৃত্যুর খবর জানার পরই শাহিন নামে এক বান্ধবীকে হোয়াটসঅ্যাপে জিনাত লেখেন, ‘রাহুলের মৃত্যুর পর আমার বেঁচে থাকার কী মানে? আমিও মরব।’

বন্ধুরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অন্য এক বান্ধবীকে রাত ৩টা ৩৯ এবং ৩ টা ৪০ মিনিটে পর পর দুটি মেসেজ করেন জিনাত। তাতে লেখা— ‘গুড বাই।’

আলির মৃত্যুর কারণেই জিনাত আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছেন পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা। মোবাইলের মেসেজের সময় থেকে পুলিশের ধারণা ভোর রাতেই গলায় ফাঁস দিয়েছেন তিনি।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ