নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে না, আগামী সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
বুধবার (২৮ মে) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে হাজির হয়ে তিনি এমন মন্তব্য ও অভিমত প্রকাশ করেন।
জুলাই আগস্টে শহীদ হয়েছে অনেক মানুষ, তবে এটা নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিক কারণ নয় বলেও উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, একাত্তরে ৩০ লক্ষ মানুষ যে শহীদ হয়েছিল তখন নির্বাচন হয় নি? ওই সরকার যদি বলতো, না; এতো মানুষ শহীদ হয়েছে নির্বাচন দেবো না। সেটা তো হয়নি।
সরকারের সংলাপ বিষয়ে সমালোচনা করে বাম দলের এই নেতা বলেন, আমরা আগেরদিন পত্রিকায় দেখলাম তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিএনপি আর জামায়াতকে। পরে আকস্মিকভাবে দেখলাম এনসিপি। প্রথমে তো ছিল না। তার মানে পাল্লা ভারী।
বিএনপি যা বলবে তার বিপরীতে দুইটা প্রস্তুত। একজন উপদেষ্টা আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি জানালেন, প্রিন্স ভাই উনাকে যদি কাল একটু পাঠান ভালো হয়। আমি বললাম বাম জোট? আপনারা কি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বসতে চান? তিনি বললেন, না, আমরা বাম জোটের সঙ্গে পরে হয়তো বসবো। আমি বললাম আপনি সরাসরি উনাকে বলেন।
কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, কেউ যদি আমাদেরকে ডাকে আমরা জানতে চাইবো এজেন্ডাটা কী? গত আগস্টের পর উনারা যতবার ডেকেছেন বিপদে পড়ার পরই ডেকেছেন, এছাড়া কোনো সংলাপ করেননি। এ ধরনের যাওয়ার তো দরকার নাই। এদিকে যুদ্ধাপরাধী খালাস পাবে, আমাদের কর্মী মার খাবে, আর আমরা যাবো তাদের ডাকে?
তিনি আরও বলেন, আমার গ্রামের কৃষক ফসলের দাম পাবে না, আমাদের শ্রমিকরা ঈদে বেতন পাবে না, আর আমরা দেখা করতে যাবো? নো। উনারা করিডোর দেবে, আর আমাদের দেখা করতে যেতে বলবে, নো।
তবে দেশের স্বার্থে ডাকলে যাবো। তবে বারবার বিপদে পড়লে ডাকবে, আমরা যাবো না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরাই সঙ্কট তৈরি করছে উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, এই পদত্যাগ নিয়ে যে সংকট তৈরি হলো, এটা তো সম্পূর্ণ উনারা করেছে। তারপরেও দেশটা যদি ভালো চালাতে পারতো তাহলে নির্বাচন দেরি করে করলেও তো কেউ আপত্তি করতো না। বলেন, এই কমাসে কোনটা ভালো চলছে? একজন যুদ্ধাপরাধী মুক্তি পেল। এ নিয়ে একজন উপদেষ্টা লিখেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল এটা। জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থান কি তাহলে এইজন্য করেছিলেন? জুলাই অভ্যত্থানের ফসল কি করিডোর দিয়ে দেবেন, বন্দর দিয়ে দেবেন? এটাই কি আপনাদের ম্যান্ডেট ছিল?
সেপ্টেম্বরে নির্বাচন সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন সম্ভব, ডিসেম্বর দেওয়া লাগবে না- আমরা দায়িত্ব নিয়ে কথা বলছি। এই সময়ে ভালো নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, টাকার খেলা বন্ধ, পেশী শক্তি বন্ধ, সবই সংস্কার করা সম্ভব।
এফপি/এস এন