২৪-এর আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধদের দলীয় করণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ. জেড. এম জাহিদ হোসেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে তার বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ তুলেন।
আজ শনিবার (৩১ মে) বিকেলে জেলা বিএনপির উদ্যোগে বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে শহীদ জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনীর উপর প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ কে এম মাহবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহা. হাছানাত আলী।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ. জেড. এম জাহিদ হোসেন বলেন, ৭৫-এ সিপাহী জনতা বিপ্লবের মধ্যে মেজর জিয়া এদেশকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। জন্মের পর থেকেই নিজেকে তৈরি করেছেন জিয়াউর রহমান দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তার কালজয়ী দর্শন সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবাদী দল এবং সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। দেশকে স্বাবলম্বী করার জন্য মানুষকে আশা জাগিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ বিএনপিকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বা থামিয়ে দেয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ ছাড়া কারো নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি পাকিস্তান, বাকশাল, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৬ এবং ২৭ মার্চ এদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ জিয়া। তিনি এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। যখন এদেশে মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ১৯৭১ সালে জেড ফোর্স গঠন করেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান।
কারণ তিনি জানতেন দেশকে স্বাধীন করতে হলে নিয়মিত বাহিনীকে লড়াই করতে হবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১১ জন সেক্টর কমান্ডার চাইলে দেশ পরিচালনা করার। কিন্তু মেজর জিয়া ব্যারাকে ফিরে গিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধেও তার অবদান রয়েছে। মাত্র কয়েক বছরে এদেশের মানুষকে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। খাল কাটার মধ্যে সারাদেশ ঘুরেছেন। সাধারণ মানুষের মানুষ গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন।
আজ যারা রেমিট্যান্স নিয়ে কথা বলেন তারা ভুলে গেছে, শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এদেশের মানুষ রেমিট্যান্স যোদ্ধা হওয়া শুরু করেছিল।
বেগম জিয়া এদেশের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, শিশু ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সহ যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কার করে নতুন রূপে দেশ গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ২৪ আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধদের দলীয় করণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আসলে তারা কোন দলের নয়, তারা এদেশের মানুষের জন্য জীবন দিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ৪৭ বাদ দিয়ে ৭১ হবে না, ৭১ বাদ দিয়ে ৭৫ হবে না, ৭৫ বাদ দিয়ে ৯০ হবে না, ৯০ বাদ দিয়ে ২৪ হবে না। তাই সকল গুম খুনের বিচার করতে হবে। যারা নির্বিচারে গুলি করে আমাদের ভাইবোনদের হত্যা করেছে তাদের বিচার করত হবে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার দেখতে চাই আমরা।
উল্লেখ্য, সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন- জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ উন নবী সালাম ও কেএম খায়রুল বাসার। আলোচনা সভায় জেলা বিএনপির সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/এসএন