জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের সরকারি কমার্স কলেজে ছাত্রদল ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার রেশ কাটছে না। সংগঠন দুটির নেতারা এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।
শিবিরের দাবি, হেল্প ডেস্কে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিবির কর্মীদের ওপর হামলা করে। হামলায় শিবিরের তিনজন আহত হন।
শিবিরের দাবি সত্য নয় জানিয়ে ছাত্রদল নেতারা বলছেন, শিবিরের বুথে রাখা মোবাইল না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা বুথ ভাঙচুর করেন। সেখানে শিবিরের কর্মীরা ‘ওরা ছাত্রদল, ধর মার’ বলে হট্টগোল তৈরি করেছে।
এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের নেতারা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে হেল্প ডেস্কে হামলার পেছনে ছাত্রদল ও বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর ‘সমন্বিত অপতৎপরতা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি।
অন্যদিকে, কমার্স কলেজের ঘটনায় ছাত্রশিবির ছাত্রদলকে নিয়ে অপপ্রচার করেছে জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদল। বিবৃতিতে শিবিরকে ভিন্নমতের প্রতি সহনশীল হয়ে অপপ্রচার ও আধিপত্যবাদের রাজনীতি পরিহার করে সুষ্ঠু ও সহাবস্থানের রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রদল।
নগর শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আজ ৩১ মে অনার্স ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সার্বিক সহযোগিতা ও খাবার পানি বিতরণ করা হয়।
অন্যদিকে ছাত্রশিবির কলেজের প্রবেশপথ সংকীর্ণ সত্ত্বেও সেখানে বুথ বসিয়ে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ও ব্যাগ রাখে। কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে শিবিরের বুথে রেখে যাওয়া তাদের মোবাইল-ব্যাগ না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা হট্টগোল তৈরি করে বুথ ভাঙচুর করে। ছাত্রদল বিষয়টি জানতে এগিয়ে আসলে কলেজের কয়েকজন শিবির কর্মী ‘ওরা ছাত্রদল, ধর মার’ বলে চিৎকার করলে সেখানে উদ্ভূত পরিস্থিতি পুলিশের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষ শান্ত হয়। ছাত্রদলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ও ব্যাগ ফিরিয়ে দেয় শিবির। এ ঘটনাকে শিবিরের ওপর ছাত্রদলের হামলা বলে ফেসবুক ও অনুগত মিডিয়া অপপ্রচার করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তারা বলেন, শিবির তথাকথিত রাজনৈতিক কৌশলের নামে গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের ছায়াতলে যে অপরাজনীতি চর্চা করেছে জুলাই আন্দোলনের পরও সেই চর্চা অব্যাহত রাখার অপচেষ্টা করছে। ছাত্রশিবিরকে ভিন্নমতের প্রতি সহনশীল হয়ে অপপ্রচার ও আধিপত্যবাদের রাজনীতি পরিহার করে, সুষ্ঠু ও সহাবস্থানের রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান করছি।
জানা গেছে, শনিবার (৩১ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সরকারি কমার্স কলেজে কেন্দ্রে অন্তত তিন হাজার শিক্ষার্থীর অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি বিতরণ করে ছাত্রদল। অন্যদিকে কলেজের প্রবেশমুখে হেল্পডেস্ক বুথ খোলে ছাত্রশিবির। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরআর