কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এসময় দুই পক্ষের ১০ থেকে ১২ টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের তুলাকান্দি গ্রামের বাদার বাড়ি ও মুন্সি বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুলাকান্দি গ্রামের ঈদগাহ মাঠে বাদার বাড়ি ও মুন্সি বাড়ির লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের শত্রুতা চলমান ছিল। গত সোমবার মুন্সি বাড়ির তরুণরা তাদের নিজ বাড়ির মাঠে ফুটবল খেলতে গেলে বাদার বাড়ির লোকজন বাঁধা দিলে দুই পক্ষই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি স্থানীয়রা মিমাংসা করে দেবেন বললেও দুই পক্ষের মধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বুধবার দুপুরে বাদার বাড়ির লোকজন এক তরুণকে মুন্সি বাড়ির লোকজন মারধর করে। এ ঘটনার পর দুই পক্ষের মধ্যে দা, বল্লম, টেঁটা, ইট-পাটকেলসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ হয় সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
দুই পক্ষের সংঘর্ষে বাদার বাড়ির আহতরা হলেন, কাউসার মিয়া (১৫), ফেরদৌস আহমেদ (১৬), সুমন মিয়া (২৮), আশরাফুল (১২), মিষ্টু মিয়া (২৬), সিয়াম মিয়া (১৫), আলাল উদ্দিন (৩৫), সহেদ মিয়া (৪০)।
অপরদিকে মুন্সি বাড়ির আহতরা হলেন, অমিত হাসান (১৮), স্বাধীন (২২), সিয়াম (২২), নিলয় (১৭), জুনাত (৩৩), সোহাগ মিয়া (৩০),জামাল মিয়া (৯০), বাসির মিয়া (৩০), নজরুল ইসলাম (৪৫), আঙুর মিয়া (৪০), রুনা বেগম (৩৭), নাদিয়া বেগম (৪০)। এছাড়াও দুই পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাদার বাড়ির আকবর ফকির বলেন, ফুটবল খেলা নিয়ে গত ৯ জুন ছেলেরা মারামারি করেছে। স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বললেও মুন্সি বাড়ির লোকজন আমাদের বাড়ির একজনকে মারধর করে। তারা আমাদের বাড়ি-ঘরে হামলা করে। এরপর আমরা প্রতিহত করতে চেষ্টা করেছি। তাদের হামলায় আমাদের বাড়ির ১০ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও দুই জনকে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে মুন্সি বাড়ির নজরুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার বিকেলে আমার ছেলে ইয়ামিনসহ আমাদের বাড়ির ছেলেরা আমাদের জায়গায় ফুটবল খেলতে গেলে বাদার বাড়ির লোকজন বাধা দিয়ে তাদেরকে মারধর করে। আমার আরেক ছেলে প্রতিবাদ করতে গেলে তাকেও মারধর করে। স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসা করে দেবেন বলে জানালেও তা তারা করেননি। এরপর আমাদের ওপর হামলা করে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর লুটপাট করেছে বাদার বাড়ির লোকজন। আমাদের বাড়ির ১৫ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছে। আমি এঘটনার বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে এলাকার অবস্থা স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে।
পিএ/টিকে