বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ইরানি হাজিদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান।
চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকটে মানবিক ও কূটনৈতিক দুই দিক থেকেই দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলো। ইরানে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে মুসলিম বিশ্বের শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় এগিয়ে এসেছে সৌদি আরব। একইসঙ্গে চীন জানিয়েছে কড়া নিন্দা।
সৌদি গেজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সুপারিশে বাদশাহ সালমান হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন যেন ইরান থেকে আগত হাজিদের পূর্ণ সহায়তা, সেবা নিশ্চিত করা হয়। এই নির্দেশনার আওতায় হাজিদের সমস্ত প্রয়োজন মেটানো হবে এবং তাদের নিরাপদে দেশে ফেরার পরিস্থিতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক সেবা দেয়া হবে।
এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে ও সংকটকালেও ধর্মীয় রীতি পালনের প্রতি সৌদি নেতৃত্বের অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অন্যদিকে, ইরানে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং বলেন, ‘ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ অখণ্ডতা লঙ্ঘনের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বিশেষভাবে আমরা উদ্বিগ্ন যে ইসরাইল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে, যা তাদের আরেকটি রেড লাইন অতিক্রমের শামিল। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে ইসরাইলকে অবিলম্বে সকল সামরিক তৎপরতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
চীন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিপক্ষে। ফু কং বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ইরানের পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকারকে সম্মান করা উচিত।’
চীন ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়েও উঠে এসেছে বিভিন্ন আলোচনায়। গত মার্চে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে রাশিয়া ও ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পারমাণবিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
সৌদি আরব যখন ধর্মীয় দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ইরানি হাজিদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তখন চীন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মঞ্চে ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় উচ্চকণ্ঠ হয়েছে। এই সংকটের মধ্যেও মুসলিম বিশ্বের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অধিকারকে ঘিরে নতুন করে জোরালো আন্তর্জাতিক অবস্থান স্পষ্ট হচ্ছে।
কেএন/এসএন