মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইসরায়েলি হামলার পর বিশ্বরাজনীতি এক নতুন ও ভয়াবহ মোড় নিয়েছে। আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব এখন বৈশ্বিক সংকটে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কায়, কারণ ইরানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে চারটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র – রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া। এর মধ্যেই এক বিস্ফোরক আশঙ্কা উঠে এসেছে: আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান তার পারমাণবিক অস্ত্র প্রকাশ্যে আনতে পারে।
বিশ্বের বহুল আলোচিত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ‘আয়রন ডোম’কে অনেকদিন ধরেই ইসরায়েলের অজেয় প্রতিরক্ষা স্তম্ভ হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু ইরানের চালানো সর্বশেষ হামলায় সেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধুলিস্যাৎ হয়েছে। তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে আয়াতুল্লাহ বাহিনী।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইসরায়েল এমন এক ভয়ানক অপরাধ করেছে, যার শাস্তি তারা পাবে। এবার তাদের রেহাই নেই।” ১৪ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে খামেনি জানান, “ইসরায়েল কেবল হামলা চালায়নি, যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই আগ্রাসনের পরিণতি ভয়াবহ হবে। সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
এমন সময় ইরান সরকার জানিয়ে দিয়েছে – যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আর কোনো ভিত্তি নেই। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একদিকে আলোচনার কথা বলে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে হামলার অনুমতি দেয়। এটা দ্বিচারিতা।”
১৪ জুন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরান এখন যেকোনো মুহূর্তে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র প্রকাশ্যে আনতে পারে। এদিকে, টুইটার ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ইরানপন্থী একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে – “আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করবে।” আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও এমন দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ভয়াবহ পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা উসকে উঠবে। এই সংকট আঞ্চলিক সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরআর