তেল স্থাপনায় হামলা বাড়লে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করবে তেহরান

টানা কয়েকদিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের হামলা ও পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। গত শুক্রবার ভোরে তেহরানসহ ইরানের বেশ কিছু স্থানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়।

পরে তীব্র শক্তি নিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে ইরানও। জবাবে ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এমন অবস্থায় ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলা আরও বাড়লে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে দেশটি।

বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে রোববার (১৫ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোতে আরও বড় ধরনের হামলা চালায়, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে এবং এটাই হতে পারে তাদের (তেহরানের) চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া।

আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এটাই ইরানের সর্বোচ্চ মাত্রার জবাব হতে পারে।”

অবশ্য হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন শনিবার জানিয়েছে, সরকার হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

প্রসঙ্গত, এই প্রণালী হলো পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র সমুদ্রপথ। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ)-এর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের মোট তেল চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়ে পরিবাহিত হয়।

সিনা তুসি আরও জানান, “আমরা এখনো সেখানে (হরমুজ বন্ধের মতো পদক্ষেপে) পৌঁছাইনি। তবে আজ ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, ইরানও হাইফায় হামলায় ইসরায়েলের কিছু জ্বালানি স্থাপনায় আঘাত করেছে বলে খবর রয়েছে।”

তিনি বলেন, “আজ জ্বালানি স্থাপনাগুলো ঘিরে পাল্টা-পাল্টি হামলা হয়েছে। এই ধারা চলতে থাকলে পুরো পারস্য উপসাগর অঞ্চল থেকে জ্বালানি সরবরাহ হুমকির মুখে পড়তে পারে।”

প্রসঙ্গত, হরমুজ প্রণালী হচ্ছে ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ পানিপথ, যার মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলোর অধিকাংশ তেল রপ্তানি হয়। এর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর ইরান এই প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল।

এফপি/ এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশের সাথে লড়াই হবে, জানিয়ে রাখল ভারত Nov 16, 2025
img
কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনের নিচে ককটেল বিস্ফোরণ Nov 16, 2025
img
প্রথম সপ্তাহতেই ধাক্কা খেলো দুলকার সালমানের কান্তা Nov 16, 2025
img
তাজুল ইসলাম-শিশির মনিরদের চালাকি ফাঁস হয়ে গেছে, মো. তারেকের মন্তব্য Nov 16, 2025
মাদক পার্টি-চক্রে নাম ওঠা নোরা সরাসরি প্রতিবাদ করেছেন Nov 16, 2025
img
আগামীতে আল্লাহ যেন দাঁড়িপাল্লাকে সংসদে পাঠান : আমির হামজা Nov 16, 2025
নতুন আঙ্গিকে শোনা যাবে রুনা লায়লার বিখ্যাত গান Nov 16, 2025
img
বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বহিষ্কার ছাত্রদল নেতা Nov 16, 2025
img
শাপলাকলি প্রতীকে মনোনয়ন ফরম কিনলেন সারজিস আলম Nov 16, 2025
img
মেগাস্টার শাকিব খানের সঙ্গে কী কথা বললেন সাইফ হাসান? Nov 16, 2025
img
ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশে আহত শিক্ষিকা ফাতেমা আর নেই Nov 16, 2025
img
রাজনীতি ছাড়লেন শমসের মবিন চৌধুরী Nov 16, 2025
img
মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে ধানের শীষে ভোট আনতে হবে : হাজী জসিম উদ্দিন Nov 16, 2025
img
‘সালমান আত্মহত্যা করে নাই, তাকে খুন করা হইছে’ Nov 16, 2025
img
প্রেমের পাশাপাশি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা জরুরি : রনবীর কাপুর Nov 16, 2025
img
বিপিএলে রাজশাহীর কোচ হলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ Nov 16, 2025
img
বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই প্রধান লক্ষ্য: লুৎফুজ্জামান বাবর Nov 16, 2025
স্পিরিট–কল্কি বিতর্কের মাঝেও নিজের পথে অটল দীপিকা Nov 16, 2025
img
সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু, আহত ১৬ Nov 16, 2025
img
আসিফ আকবরের মন্তব্যে বাফুফের কাছে দুঃখপ্রকাশ বিসিবির Nov 16, 2025