জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে উন্নয়ন সংস্থা ‘কারিতাস বাংলাদেশ’।
জিআইজেড-এর ২০২৩ সালের গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। ২০০৮-১৪ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশে ৪৭ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শহরে আশ্রয় নেওয়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশই উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার।
বুধবার (২৫ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও নগর জীবনের বাস্তবতাঃ নীতিমালা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পন্থা’ শীর্ষক পরামর্শ সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ড. জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন কারিতাস বাংলাদেশের পরিচালক (কর্মসূচি) দাউদ জীবন দাশ। আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, কারিতাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান অ্যালেক্সজান্ডার ত্রিপুরা প্রমুখ।
সোহরাব হাসান বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় হাজার হাজার একর ফসলি জমি ঘের করা হচ্ছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় টেকসই বাঁধ নেই। দুর্যোগকালে উপকূলের মানুষেরা নিজেরাই মানবঢাল হয়ে বাঁধ রক্ষা করেন। তারা মন্ত্রণালয় কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপেক্ষায় থাকেন না। দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে না পেরে তারা প্রতিনিয়ত নিজ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
দুর্যোগ কবলিত উপকূলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সংকট মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়, অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন, লবণাক্ততা ও নদীভাঙনের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে শহরমুখী হচ্ছেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। তারা নিজ এলাকা ছেড়ে শহরের বস্তিতে নিম্নমুখী জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের জীবন-যাত্রার মান কমে যাচ্ছে। তাই উপকূলবাসীকে নিরাপদে রাখতে, জীবন-মান ধরে রাখতে হলে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।’
সভায় জানানো হয়, দুর্যোগ সাড়াদান, প্রশমন ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে কারিতাস বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি গৃহ নির্মাণ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিয়েছে।
এ ছাড়া কারিতাস ৩ হাজার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ১৪ হাজার কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। শুধুমাত্র উপকূলীয় ও বন্যাপ্রবণ এলাকার দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি প্রশমনে বিভিন্ন জেলায় ৩২৯টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করেছেধাক
পিএ/টিকে