দেশের এক জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ফরহাদ মজহারের দেওয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে কথা বলেছেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, ফরহাদ মজহার নির্বাচন নিয়ে যা বলেছেন, এটা আমি মনে করি খুবই অ্যালার্মিং। উনি বলেছেন, নির্বাচন যে বাংলাদেশকে একটা ভালো জায়গায় নেবে- এটা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না। তাহলে জবরদস্তি করে এটা চাপিয়ে দেওয়া ভুল।
মানে এই যে নির্বাচনটার কথা বলা- এর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা ভালো জায়গায় যাবে, এটা এ দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে না। তাহলে সবার উপর জবরদস্তি করে একটা নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়াটা ভুল হবে। আর উনি এটাও বলেছেন, আবার উল্টোদিকে আবার সাধারণ মানুষ এই আস্থাও হারিয়েছে যে ড. ইউনূস তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন। এটা হলো রাজনৈতিক বাস্তবতা।
অর্থাৎ সাধারণ মানুষ এখন ড. ইউনূসের উপরও আস্থা রাখতে পারছে না। সাধারণ মানুষের যে চাহিদা সে চাহিদা ড. ইউনূস পূরণ করতে পারবেন- এই প্রত্যাশা, এই চিন্তা সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই। আবার নির্বাচন হলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এটাও সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না। এটা হলো উনার বক্তব্য। উনার বক্তব্যের সঙ্গে কিন্তু আমি মোটামুটি একমত।
বুধবার (২ জুলাই) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ কামাল বলেন, আমি একটা জায়গায় দ্বিমত। সে জিনিসটা হলো- তাহলে আমরা কী করব? নির্বাচন আমাদের সমাধান দিবে না। ড. ইউনূস আমাদের সমাধান করতে পারবে না, তাহলে আমরা কী করব? আমি মনে করি, এই দুটো চিন্তার মধ্যে নির্বাচনটা হল সবচেয়ে অধিকত গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। এই কারণে যে নির্বাচনে হয়তো আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হবে না।
কিন্তু একটা কাজ তো হবে, জনগণের যে শক্তিটা জনগণ যে তার ভোটাধিকারের মাধ্যমে একজন লোককে ক্ষমতায় বসাতে পারে, আবার ক্ষমতা থেকে নামিয়ে ফেলতে পারে- এই শক্তিটা কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে আমরা একরকম ভুলতে বসেছি। সেই জায়গা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। জনগণ আবার আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, জনগণ একসময় মনে করতেছিল যে আমাদের তাহলে ভোটাধিকারের কোনো মূল্য নাই। আমার হাতে কোন ক্ষমতা নাই। কিন্তু যদি নির্বাচনটা ঠিকঠাক মতো হয়, জনগণ এই আত্মবিশ্বাসটা ফিরে পাবে- হ্যাঁ, আমি পারি। আমি একদল লোককে ক্ষমতায় বসাতেও পারি, আবার ক্ষমতা থেকে নামাতেও পারি। জনগণ যদি নিজের ভেতর সেই শক্তিটা অনুভব করে কেবল তাহলেই কিন্তু আমরা মুক্তির দিকে কিছুটা হলেও পথ অগ্রসর হতে পারব, এটা আমি মনে করি, এটা আমার অপিনিয়ন।
ইউটি/এসএন