খুলনায় গ্রাহককে হাতুড়িপেটা, ইসলামী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

খুলনার ফুলতলায় ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার স্টোর কক্ষে এক স্কুলশিক্ষককে আটকে রেখে চোখ-মুখ বেঁধে হাতুড়িপেটা এবং প্লায়ার্স দিয়ে নখ তোলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আশিক, মিজান ও মামুন। তারা ইসলামী ব্যাংকের ফুলতলা শাখার কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষক সাইফুল্লাহ হাজেরী (৩৫) ফুলতলা উপজেলার বেলেপুকুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাবা এ এইচ এম শফিউল্লাহ হাজেরী ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট (মেসার্স হাজেরী এন্টারপ্রাইজ)-এর স্বত্বাধিকারী।

সাইফুল্লাহ অভিযোগ করেন, সম্প্রতি তিনি ব্যাংকে গেলে ৪-৫ জন কর্মকর্তা তাকে চোখ-মুখ বেঁধে স্টোর কক্ষে নিয়ে পায়ের তালু ও হাঁটুতে হাতুড়ি দিয়ে পেটান। একপর্যায়ে তারা প্লায়ার্স দিয়ে তার নখ তুলতে চান। পরে তার কাছ থেকে সাদা কাগজ, চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি এই এজেন্ট ব্যাংক থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান ক্যাশ ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ও মার্কেটিং অফিসার মনিরুল গাজী। এই ঘটনায় ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর জের ধরেই গত মঙ্গলবার বিকেলে সাইফুল্লাহকে ডেকে নিয়ে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার পর ইসলামী ব্যাংকের জোনাল অফিস ও শাখা ব্যবস্থাপক হাসপাতালে গিয়ে আহত সাইফুল্লাহকে দেখে আসেন। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও পুলিশের হস্তক্ষেপে থানায় মামলা রেকর্ড হয়।

ফুলতলা থানার ওসি মো. জেল্লাল হোসেন বলেন, ব্যাংকে আটকে নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

ইতোমধ্যে আমরা তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তা—আশিক, মিজান ও মামুনকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

তবে ইসলামী ব্যাংকের ফুলতলা শাখা ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি ব্যাংকে ছিলাম না। তদন্ত চলছে। কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ‘আখ্যা’ দিয়ে ঢাবি ছাত্রদল কর্মীকে হয়রানির অভিযোগ Jul 26, 2025
img
জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার আহ্বান জামায়াত আমিরের Jul 26, 2025
img
এক ফ্রেমে সৃজিত-সুস্মিতা, প্রেম না বন্ধুত্ব? Jul 26, 2025
img
বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল যুক্তরাষ্ট্র Jul 26, 2025
img
ঘোমটার ভুলে বউ বদল? আসছে ‘কনে দেখা আলো’ Jul 26, 2025
img
আমাদের মূর্খ বলা হয়েছে, কিন্তু আমি দস্তখত করতে জানি: চরমোনাই পীর Jul 26, 2025
img
ভারত থেকে গত এক মাসে ১৫০০ বাংলাদেশিকে পুশ-ইন : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 26, 2025
img
পথেই বগি ফেলে চলে গেল কক্সবাজার এক্সপ্রেস Jul 26, 2025
img
চিত্রনাট্য নিয়ে রাতভর প্রস্তুতি শুরু শুভশ্রীর Jul 26, 2025
img
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭ ওমরাহযাত্রী Jul 26, 2025
থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া উত্তেজনায় শান্তির ডাক Jul 26, 2025
মোহাম্মদপুর ও পুশব্যাক ইস্যু নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 26, 2025
img
আয় বাড়াতে আরও ৩ জাহাজ কিনছে সরকার : সাখাওয়াত হোসেন Jul 26, 2025
img
ক্ষমা চেয়েও রেহাই মিলছে না, আবারও বিতর্কের মুখে সুনীল শেট্টি Jul 26, 2025
img
দেশি-বিদেশি গোষ্ঠী দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : আখতার Jul 26, 2025
img
উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে : মেজর হাফিজ Jul 26, 2025
img
আবাসন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে নিতে হবে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন Jul 26, 2025
img
আরব আমিরাতেই হবে এশিয়া কাপ, চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ Jul 26, 2025
img
ভারত না আসায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে পারে যে দুই দল Jul 26, 2025
বিশ্ব শান্তিতে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা মার্কো রুবিওর Jul 26, 2025