গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত রমজানের ঘটনায় আরও এক হত্যা মামলা

গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রিকশাচালক রমজান মুন্সি নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ সদর থানায় নিহতের ভাই জামাল মুন্সি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হলেও কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে যানজট তৈরি হয়। দুপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা গ্যারেজে রেখে রমজান মুন্সি (৩২) খাবার খেতে বাড়ি ফিরছিলেন। বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় পৌঁছালে সেখানে কয়েক হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।

মিছিলকারীরা দোকানপাট ভাঙচুর ও পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করে। তখন যৌথবাহিনী ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় রমজান লঞ্চঘাটের ফলপট্টিতে অবস্থান নেন।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। যৌথবাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় রিকশাচালক রমজান মুন্সি নিরাপত্তার জন্য চৌরঙ্গী সিনেমা হলের গলিতে আশ্রয় নেন। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে সিনেমা হলের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় রমজানের বুকের ডান পাশে গুলি লাগে এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটে রমজান মুন্সি মারা যান।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রা কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলাকলে রমজান মুন্সি নিহতের ঘটনায় তার বড় ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে ৫টি হত্যাসহ মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১০ হাজার ১৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আর ৯ হাজার ৪৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এফপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img

ডিআইজি রেজাউল করিম

যারা ফ্যাসিস্ট তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব Sep 16, 2025
img
আর্থিক সুবিধা নেওয়ায় কর কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে বরখাস্ত Sep 16, 2025
img
পেলেকে ছাড়িয়ে রেকর্ড দামে বিক্রি হলো মেসির রুকি কার্ড Sep 16, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে শিল্প মালিক প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
মিয়ানমারে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সময় ১১ জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী Sep 16, 2025
img
চবিতে ‘হোস্টেল সংসদ’ নির্বাচনের ঘোষণা Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 16, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Sep 16, 2025
img
দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে শ্রীলঙ্কা, খালি হাতে বিদায় নিল হংকং Sep 16, 2025
img
ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি করল এনবিআর Sep 16, 2025
img
ইভ্যালি থেকে বেরিয়ে একই কৌশলে প্রতারণা, নারী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতেনি বাংলাদেশ গুগোল করে নিশ্চিত হলেন ট্রট Sep 16, 2025
img
ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে : রাশেদ খান Sep 16, 2025
img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025