কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগকে নিয়ে হঠাৎ নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। পুলিশের আশঙ্কা, এই রাজনৈতিক দলটি দেশে নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
এসবির আশঙ্কা, আওয়ামী লীগ গোপনে একত্রিত হয়ে হামলা বা সহিংসতার ঘটনা ঘটাতে পারে। আগামী ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা হতে পারে।
দলটির কিছু নেতা ও কর্মী এ সময় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, বিশৃঙ্খলা কিংবা ভাঙচুর চালাতে পারে বলেও ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ অবস্থায় পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে বিভিন্ন ইউনিটকে জরুরি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে চিঠি দিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দেশের বিভিন্ন পুলিশের ইউনিটে একটি বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে এসবি। এসবির রাজনৈতিক উইংয়ের ডিআইজি চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেন।
এই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপপুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপারসহ দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারের কাছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে ঘিরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো পহেলা জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই সময়ে বিতর্কিত ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো দেশব্যাপী অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে বা উসকানি সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টাও হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সব ইউনিটকে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম তীব্র করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
বিশেষ অভিযান চালাতে বলা হয়েছে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ সন্দেহভাজন সব যানবাহনে তল্লাশি, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন, বিমানবন্দরের আশপাশে নজরদারি এবং মোবাইল পেট্রোল বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, সাইবার পেট্রোলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদারের নির্দেশও রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের কিছু যুব ও ছাত্র সংগঠনের নেতারা মাঠে না থাকলেও অনলাইনে ‘ভার্চুয়াল স্কোয়াড’ গড়ে তুলেছে, যারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল চালিয়ে সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর কাজ করছে।
এসব বিষয়ে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। দেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে রাজনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে। তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করা হবে। যারা দেশে-বিদেশে বসে পরিস্থিতি অশান্ত করার পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিএ/টিএ