মাশরুম খেতেই সুস্বাদু নয়, পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ

মাশরুম কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও যথেষ্ট উপকারী। যা অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন খাবার হওয়ায় এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।

মাশরুমের পুষ্টিমান তুলনামূলকভাবে অত্যধিক; এর প্রোটিন অতি উন্নতমানের এবং মানব দেহের জন্য অতিশয় উপকারী। একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো- মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অতীব প্রয়োজনীয় এ ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান।

মাশরুমের প্রোটিনে-ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অতি স্বল্প। এছাড়া মাশরুমের রয়েছে কোলেস্টেরল ভাঙার উপাদান- লোভস্ট্রাটিন, অ্যান্টাডেনিন, ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন। ফলে মাশরুম খেলে শরীরের কোলেস্টেরল জমতে পারে না বরং শরীরে বহু দিনের জমানো কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যায়।

পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী মাশরুমে রয়েছে ৩.১ গ্রাম আমিষ, ০.৮ গ্রাম স্নেহ, ১.৪ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ০.৪ গ্রাম আঁশ, ৪.৩ গ্রাম শর্করা, ৬ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ১১০ মি. গ্রাম ফসফরাস, ১.৫ মি. গ্রাম লৌহ, ০.১৪ মি. গ্রাম ভিটামিন বি১, ০.১৬ মি. গ্রাম বি২, ২.৪ মি. গ্রাম নায়াসিন, ১২ মি. গ্রাম ভিটামিন সি। এছাড়া খাদ্যশক্তি থাকে ৪৩ ক্যালোরি।

সাধারণত মাশরুমে মাছ-মাংসের চেয়ে কিছু বেশি এবং প্রচলিত শাক-সবজির চেয়ে দ্বিগুণ খনিজ পদার্থ থাকে। পুষ্টিবিদদের মতে, ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫-৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। পক্ষান্তরে ১০০ গ্রাম মাছ, মাংস ও ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ হলো যথাক্রমে ১৬-২২ গ্রাম , ২২-২৫ গ্রাম ও ১৩ গ্রাম মাত্র।

মাশরুম খুব নিম্নশক্তি সম্পন্ন খাবার (Low calorie)| এতে কোলেষ্টরল নেই, চর্বির পরিমাণ অত্যন্ত কম (২-৮%) কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড লিনোলোয়িক এসিড রয়েছে।

আসুন জেনে নেই নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা এবং এর মাধ্যমে যেসব রোগ এড়ানো যায়-

  • বিভিন্ন রোগব্যাধিতে মাশরুমের ব্যবহার সুবিদিত। বাত, ব্যথা, জন্ডিস, কৃমি, রক্ত বন্ধ হওয়ার কাজে মাশরুম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  • মাশরুম রক্তচাপ কমায় এবং টিউমার কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে।
  • নিয়মিত মাশরুম থেকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি হয়। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং সর্দি, কাশি দূর হয়।
  • মাশরুম উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমূত্র রোগীদের জন্য উপকারী।
  • মাশরুমে যথেষ্ট আঁশ (Fiboc) থাকার শরীর স্লিম রাখতে সহায়তা করে।
  • মাশরুম কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। মাশরুম প্রোটিনের হজম ক্ষমতা (Digestability) শতকরা ৭০-৮০ ভাগ হওয়ায় রোগীদের জন্য সহজপাক এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার।

যেভাবে খেতে হবে
কাঁচা এবং শুকনা মাশরুম ১৫ বা ২০ মিনিট ফুটানো গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে ধুয়ে পানি ফেলে দিয়ে ফ্রাই বা সবজির মতো করে, তরকারি বা মাছ গোশতের মধ্যে দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মিল্টনের আশ্রমে থাকা শিশু-বৃদ্ধদের দায়িত্ব নিচ্ছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন May 06, 2024
img
১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু ১৫ জনের : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর May 06, 2024
img
সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে চেয়ারম্যানরা এগিয়ে, টিআইবির বিশ্লেষণ May 06, 2024
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি May 06, 2024
img
রাজধানীর যেসব স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট May 06, 2024
img
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে May 06, 2024
img
দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টির আভাস, নৌ বন্দরে ২ নম্বর সংকেত May 06, 2024
img
হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ৩ সেনা নিহত, বন্ধ কেরাম শালোম ক্রসিং May 06, 2024
img
পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আইওএম'র মহাপরিচালক May 06, 2024
img
রাজধানীতে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে নামল শিলাবৃষ্টি May 05, 2024