ডাকসু নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবে তারাই আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। এ নির্বাচন দেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও জুলাই অভ্যুত্থানের সংগঠক আবু সাদিক কায়েম। শনিবার (২ জুলাই) দেশের একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী আমাদের প্রথম দাবি ছিল ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়া। এবং আমরা বলেছিলাম জুলাই পরবর্তী ছাত্র রাজনীতির আমূল পরিবর্তন চাই। ছাত্র রাজনীতি হবে মার্কেট প্লেস অব আইডিয়া। আমরা সবাই শিক্ষার্থীদের কাছে আইডিয়া নিয়ে যাব শিক্ষার্থীরা যার আদর্শ ভালো সেটা গ্রহণ করবে, যার আদর্শ ভালো লাগবে না সেটার সমালোচনা করবে। কিন্তু আমরা কেউ হকিস্টিক বা স্ট্যাম্প নিয়ে যাবো না। আমরা এ সমালোচনাগুলোকে গ্রহণ করবো এবং নিজেদেরকে শোধরে নিব।
শিবির নেতা বলেন, বিগত সময়ে আমরা যে পেশিশক্তির রাজনীতি দেখতে পেয়েছি, যে দাসত্বের রাজনীতি দেখতে পেয়েছি, সেটা কাউকে করতে দিব না। যদি কেউ করতে আসে সবার আগে আমরা এটার প্রতিবাদ করবো। এই ক্যাম্পাসগুলোতে আমরা যদি গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই, এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়া। এক বছর পর গত তিনদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসুর তফসিল ঘোষণা করেছে বিলম্বিত হলেও সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই।
সাদিক বলেন, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বা নির্বাচন কমিশনে যারা আছে তাদের মধ্যে সাদা দলের প্রতিনিধি অনেক বেশি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবো ডাকসুর যে নির্বাচনি প্রক্রিয়া, যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তা যেন সম্পন্ন হয়। কোনো একটা দলের প্রতি তাদের যেন বিশেষ সমর্থন না থাকে। আমরা আশা করতেছি জুলাই পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবে তারা আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। যারাই নির্বাচিত হবে আমরা সবাইকে স্বাগত জানাবো।
ডাকসুতে শিবিরের প্যানেল নিয়ে তিনি বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জায়গা থেকে আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপ করছি। আমরা একটা প্যানেল গঠন করবো, আশা করতেছি এটা একটা সার্বজনীন প্যানেল হবে। এখানে নারীদের প্রতিনিধি থাকবে এবং অন্যান্য সকল গ্রুপের প্রতিনিধি থাকবে। একটা সার্বজনীন প্যানেলের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শিবির নেতা বলেন, ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিস্থিতি, শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আমরা আশাবাদী। কিন্তু যে কমিশন গঠন করা হয়েছে সে কমিশন যদি আরও ইনক্লুসিভ হতো তাহলে আরও ভালো হতো। এখানে যদি আরও নিরপেক্ষ কমিশন নিয়ে আসা হতো তাহলে ভালো হতো। তারপরও আমরা আশা করবো যারা নির্বাচন কমিশনে আছে তারা জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা, শহিদদের যে আকাঙ্ক্ষা সে আকাঙ্ক্ষাকে লালন করে একটা ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে।
সাদিক কায়েম বলেন, আমরা মনে করি এ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। কারণ এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবে, তারাই ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য চেষ্টা করবে, শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়ার কথাগুলো বলবে এবং আগামীর বাংলাদেশ তারাই নেতৃত্ব দিবে। সেজন্য ডাকসু নির্বাচনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং এ নির্বাচনে আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, শিক্ষার্থীদের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, সে আলোকে যেন একটা স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন হয় সে আশাই আমরা রাখছি।
কেএন/টিএ