২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার জেরে মে মাসে যে সংঘাত শুরু হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে, তা মার্কিন কূটনীতির কারণেই থামানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ট্যামি ব্রুস বলেন, “অবশ্যই ভারত এবং পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত আমাদের স্মরণে আছে। এটা ছিল এমন এক সংঘাত, যা অনেক ভয়াবহ রূপ নিতে পারত।”
“আমি নিজে তখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছিলাম। আমি দেখেছি যে সংঘাত থামানোর জন্য প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তৎপরতা। যুদ্ধরত দুই দেশের কর্মকর্তাদের তারা একের পর এক টেলিফোন করেছেন, সংঘাতের বিপজ্জনক পরিণতি সম্পর্কে বুঝিয়েছেন এবং দুই পক্ষকে সমঝোতায় আসতে রাজি করিয়েছেন।”
“এটা আমাদের জন্য খুবই স্মরণীয় ও গর্বের মূহূর্ত এবং ভালো দৃষ্টান্ত যে আমাদের দেশের শীর্ষ নেতারা একটি সম্ভাব্য মহাবিপর্যয়কে থামিয়েছেন। আজ এই কক্ষে যেসব সাংবাদিকরা উপস্থিত আছেন, তাদেরও সেসব দিন স্পষ্টভাবে স্মরণে থাকার কথা।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মিরে জঙ্গি হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি পর্যটক নিহত হন। হামলার কয়েক ঘণ্টা পর পাকিস্তানি কাশ্মির-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। কিন্তু দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলে, পাকিস্তানকে হেয় করার জন্য ভারত নিজে এই হামলার পরিকল্পনা সাজিয়েছে।
এ নিয়ে নয়াদিল্লি ও ইসলামাদের মধ্যে উত্তেজনার মাঝেই ৪ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মির, পাঞ্জাব ও সিন্ধে অভিযান পরিচালনা করে ভারতের বিমানবাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনী সেই অভিযানের নাম দেয় অপারেশন সিঁদুর।
এর পর ৭ জুন থেকে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে ৯ জুন থেকে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ।
সম্প্রতি এই সংঘাত নিয়ে খানিকটা টানাপড়েন শুরু হয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন যে বারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান ট্রাম্পের এই দাবির সত্যতা স্বীকার করেছে; তবে ভারত এখনও এই সংঘাত ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
তবে মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে ট্যামি ব্রুস বলেছেন, ভারত-পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ইতিবাচক। তিনি বলেন, “আমি এখানে বলতে চাই যে ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের নেতৃত্বকে ভালোভাবে জানেন এবং সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান।”
সূত্র : জিও নিউজ।
পিএ/এসএন