রান্নায় সুগন্ধি বৃদ্ধি ছাড়াও দারুচিনির যত গুণ

দারুচিনি মূলত গাছের ছাল। যা পৃথিবীর সেরা সাত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে একটি। এই ছালকে অনেকে মশলা হিসেবেই চেনেন। মিষ্টি স্বাদ এবং সুন্দর সুবাসের জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দীর ধরে এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এই ছালে রয়েছে অবাক করার মতো অনেক উপাদান।

দারুচিনিতে রক্তের শর্করার রোধকসহ উন্নত অসাধারণ ওষুধি গুণাবলী রয়েছে, যা প্রদাহ কমাতে এবং স্নায়বিক স্বাস্থ্য উন্নীত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও সুগন্ধি মসলা হিসাবে দারুচিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত। শুধু রান্নায় গন্ধ বৃদ্ধি নয়, শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্যই দারুচিনির ব্যবহার করা যায়। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।

চলুন জেনে নেই দারুচিনি আমাদের শরীরের কি কি উপকারিতা সাধন করে থাকে-

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ
গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুচিনি সাহায্য করে। যারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ঘরোয়া উপাদান হিসেবে দারুচিনি খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।

খাদ্যের বিষক্রিয়া
খাদ্য-বিষক্রিয়া থেকে আক্রান্ত হলে দারুচিনি খেলে উপকার পাওয়া যায়। কারণ এই মসলা পাকস্থলির ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাস দমন করতে সাহায্য করে।

ব্যাক্টেরিয়া জনিত পেটের অসুখ থেকে বাঁচতে
দারুচিনিতে আছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। যা পেটে ব্যাক্টেরিয়া কারণে যেসব অসুখ হতে পারে, তা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

অন্ত্রে অস্বস্তি কমাতে
‘ইরিটেবল বাউয়াল সিন্ড্রম’ বা পেটের ভিতরে অন্ত্রের যেকোনো অস্বস্তিকর অনুভূতি কমাতে দারুচিনি কাজ করে থাকে। গ্যাস্ট্রোনমিকাল অংশে ক্ষত ভালো করা এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ‘গ্যাস্ট্রিক জুস’য়ের কার্যপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।

বাত ও অস্টিওপোরোসিস
দারুচিনিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, যা হাড় গঠন, রক্ত ও শরীরের অন্যান্য কোষ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যাদের শরীরে খনিজ উপাদানের অভাব থাকে তাদের বাত ও অস্টিওপোরোসিসের সমস্যা হতে পারে। ব্যথার স্থানে দারুচিনির তেল লাগালে এবং দারুচিনি চা পানের অভ্যাস গড়ে তুললে উপকার পাওয়া যায়।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
পৃথিবীর সেরা সাত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় রয়েছে দারুচিনি। শরীরের বিভিন্ন অংশের ক্ষত সারিয়ে তুলতে এই মসলা বেশ কার্যকর।

ওজন কমাতে সহায়ক
যারা ওজন কমাতে চান, তাদের খাবারের তালিকায় দারুচিনি রাখা খুবেই জরুরি। কারণ দারুচিনি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে এবং হজমেও সাহায্য করে। আর তাই এই উপাদান ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পেশীর ব্যথা উপশমে সাহায্য করে
হঠাৎ টান বা অন্য কোন কারণে পেশীতে ব্যথা হলে আহত স্থানে দারুচিনি তেল দিয়ে মালিশ করলে উপকার হওয়া যায়।

অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান
শরীরে ছত্রাকের সংক্রমণ বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে দারুচিনি।

দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির সমস্যায় দারুচিনি
চুইংগাম, মিন্ট চকলেট, মাউথওয়াশ, টুথপেস্ট ইত্যাদি তৈরিতে বহুল প্রচলিত একটি উপাদান হল দারুচিনির তেল। এই উপাদান দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে মুখের ভিতরে এমন ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার ও টিউমার, মেলানোমা বা ত্বকের মেলানিন কোষ মিলে যে টিউমার হয় তার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে দারুচিনি। লিউকোমিয়া ও লিমফোমা ক্যান্সারের কোষগুলোর প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে এই মসলা।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: