নির্বাচন কমিশনের রিমোট কোথায়, প্রশ্ন হাসনাতের

নির্বাচন কমিশনকে দলকানা এবং এটি এখন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে- এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের রিমোট কোথায়? বর্তমান কমিশনের একজন বিএনপি-পন্থী, কেউ অন্যপন্থী, কেউ বামপন্থী।

রোববার (২৪ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে শুনানিতে মারামারির ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা এই নির্বাচন কমিশনের বস্তুনিষ্ঠ আচরণ দেখতে চাই। এই নির্বাচন কমিশন ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ পদ্ধতিতে গঠিত হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন পক্ষের লোক রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে একজন বিএনপি-পন্থী, কেউ অন্যপন্থী, কেউ ডানপন্থী, কেউ বামপন্থী; অথচ আমরা চেয়েছিলাম বাংলাদেশপন্থী নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের যে ধরনের অ্যানোমালিজ রয়েছে, … না হয় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য খুব শিগগিরই আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব।

হাসনাত বলেন, এই নির্বাচন কমিশন কতিপয় পার্টির পার্টি অফিস হয়ে গিয়েছে। আমরা বারবার বলেছি- আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে যেতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের মানুষ আবার গুন্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না।

তিনি বলেন, যদি একটি সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চাই, তাহলে আমরা এই নির্বাচন কমিশনকে বস্তুনিষ্ঠ, পেশাদারিত্বের ভূমিকায় দেখতে চাই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলকানা আচরণ করছে, একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নির্লজ্জভাবে কাজ করছে- আমরা যে নির্বাচনমুখী হচ্ছি সেটির অন্তরায় বলেই মনে করছি। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই দলমত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের যে আস্থা ছিল, সে আস্থা ক্রমশ হারাচ্ছে। আমাদের দল নিবন্ধন থেকে শুরু করে, প্রতীক বরাদ্দ, সীমানা নির্ধারণ- প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি; আমরা যখন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মিটিং করি, তখন তাদের এক ধরনের আচরণ থাকে, পরে তারা একটা সময় চায়। এরপর ওই সময়ের মধ্যে কী হয়, সেটা তারাই বলতে পারবেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের রিমোট কন্ট্রোল কোথায় রয়েছে, সেটা এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে অজ্ঞাত। নির্বাচন কমিশনের যারা কমিশনার রয়েছেন, আপনারা যদি মনে করেন আপনারা নিজেরা এই নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করতে পারবেন না, বরং অন্যরা আপনাদের পরিচালনা করে- তাহলে তা মানুষের সামনে প্রকাশ করুন।

নির্বাচন কমিশনার এবং সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন দলের সঙ্গে কানেকশন খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন এবং সেগুলো আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে।

আপনারা যারা সাংবাদিক রয়েছেন, আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে- আসলে বিএনপি ও জামায়াতসহ অন্যান্য সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলো এই নির্বাচন কমিশনকে কতটা কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

তিনি বলেন, যারা এখানে ইলেকশন কমিশনের কমিশনার রয়েছেন, তারা ওই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কে কীভাবে সম্পৃক্ত এবং কে কাকে মেইনটেইন করে। শুধু নির্বাচন কমিশন নয়; সচিবালয় থেকে শুরু করে বাংলাদেশের পুলিশ ও অন্যান্য অফিসগুলো- আমরা শুনতে পাই এগুলো এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এগুলো খুঁজে বের করা আপনাদের দায়িত্ব।

সচিবালয়ের বাইরেও ‘সেকেন্ড সচিবালয়’ গড়ে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এ নেতা বলেন, আমরা শুনতে পাই এগুলো এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পিএস আব্দুল সাত্তার সাহেবের নাম শুনছি- তিনি নাকি এখন অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং সচিবালয়ের বাইরে নাকি একটা সেকেন্ড সচিবালয় স্থাপন করেছেন। গণমাধ্যমে আপনাদের দায়িত্ব এটি খুঁজে বের করা এবং জনগণের সামনে উন্মোচন করা।

এর আগে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানিতে রুমিন ফারহানার গ্রুপের সঙ্গে অপর পক্ষের মারামারি হয়। এতে এনসিপি নেতা আতাউল্লাহ আহত হন।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, প্রতিযোগিতার রাজনীতি করুন: জুয়েল Oct 17, 2025
img
শেষ মুহূর্তে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কারো না আসাটা ডিস্টার্বের অংশ: মির্জা আব্বাস Oct 17, 2025
img
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় খাদ্য মজুতের ঘোষণা সুইডেনের Oct 17, 2025
img
শাকসু নির্বাচনের দাবিতে রঙ তুলিতে প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের Oct 17, 2025
img
আগামীকাল রিয়া মনিকে তালাকের পর দুধ দিয়ে গোসল করব : হিরো আলম Oct 17, 2025
img
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জবিতে মশাল মিছিল Oct 17, 2025
বাজারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হলে মুখ লুকাতে হয় Oct 17, 2025
img
মার্টিন ওডেগোর ছিটকে যাওয়ায় আর্সেনাল শিবিরে বড় ধাক্কা Oct 17, 2025
img
মরক্কোয় জেন-জি বিক্ষোভে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীকে কারাদণ্ড Oct 17, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের সেইফটি নিয়ে চিন্তিত: সারজিস Oct 17, 2025
img
পাকিস্তান-আফগানিস্তানের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ল Oct 17, 2025
img
গাজায় ৩ মাসের খাদ্য মজুত আছে : ডব্লিউএফপি Oct 17, 2025
img
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে অভ্যুত্থানে সঙ্গে বেঈমানি হবে : তাহের Oct 17, 2025
img
রংপুরে বিএনপি নেতার ওপর হামলার ঘটনায় সড়ক অবরোধ Oct 17, 2025
img
আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনেই জুলাই সনদ কার্যকর করা উচিত: সাইফুল হক Oct 17, 2025
img
গাজায় স্থায়ীভাবে শান্তির পথ তৈরি করতে চায় তুরস্ক Oct 17, 2025
img
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ Oct 17, 2025
img
ক্রিকেটে আসছে নতুন ফরম্যাট ‘টেস্ট-টোয়েন্টি’, চালু হবে আগামী বছর Oct 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তেল-গ্যাস কিনতে আলোচনা চলছে : ভারত Oct 17, 2025
জুলাই সনদ স্বাক্ষরে অনুষ্ঠানে পুলিশের লাঠিচার্জ, জামায়াত আমীরের নিন্দা Oct 17, 2025