প্রেসক্রিপশনে কোম্পানির প্রভাব, বাড়ছে ওষুধের দাম : ফরহাদ মজহার

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যখাত কার্যত নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানির দ্বারা। অধিকাংশ রোগীর ব্যবস্থাপত্র তৈরি হয় কোম্পানির নির্দেশনা অনুসারে। এতে ওষুধের দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।

শনিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) আয়োজিত ‘অপার সম্ভাবনার নার্সিং পেশা : বৈষম্য, প্রতিবন্ধকতা, হতাশা, সরকার ও প্রশাসনের দায় ও সমাধানে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

ফরহাদ মজহার বলেন, ১৯৮০-এর দশকে বেসরকারিকরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য খাতের অবক্ষয় শুরু হয়। বড় বড় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ও প্রাইভেট হাসপাতালের প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশন লিখতে বাধ্য হচ্ছেন কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী। এতে ওষুধের দামও বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে যখন কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন নার্সদের গুরুত্ব শ্রমিকের স্তরে নেমে আসে। প্রাইভেট খাত কখনোই নার্সদের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে পারে না। আমি প্রাইভেট সেক্টরের বিপক্ষে নই, কিন্তু এটিকে ইতিবাচক বলা যায় না।

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, বর্তমানে দেশের ৬৭ শতাংশ রোগ অসংক্রামক। এই রোগ প্রতিরোধে নার্সদের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও জনসচেতনতায় নার্সেরা কাজ করলে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। শুধু ওষুধ দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

নার্সদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের মূল রক্ষাকর্মী নার্সরা। অথচ দেশে চিকিৎসাকে কেবল চিকিৎসকের বিষয় বলেই ধরা হয়। স্বাস্থ্যসেবায় নার্সিং পেশাকে কেন্দ্রীয় জায়গায় আনতে হবে। নার্সদের পেশাগত মর্যাদা, প্রশিক্ষণ এবং সম্মান নিশ্চিত না করলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফুল ইসলাম, মহাসচিব আসাদুজ্জামান জুয়েল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক জরিনা খাতুন।

এমকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার Sep 01, 2025
img
দুই বাস্তবতা মিলে ভয়াবহ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে : জিল্লুর রহমান Sep 01, 2025
img
ইন্দোনেশিয়ায় আন্দোলন দমনে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী Sep 01, 2025
img
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদে ২ হাজার ১৬৯ জন নিয়োগ দেবে পিএসসি Sep 01, 2025
img
মেসি-সুয়ারেজদের হারিয়ে লিগস কাপ জিতল সিয়াটল Sep 01, 2025
img
সাভারে চাঁদাবাজির অভিযোগে ‘হাতকাটা’ টিপুসহ গ্রেপ্তার ৩ Sep 01, 2025
img
ডিপ্লোমা পরীক্ষায় ব্যবহারিক নম্বর এন্ট্রির সময় বাড়াল কারিগরি শিক্ষাবোর্ড Sep 01, 2025
img
সিইসির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক দুপুরে Sep 01, 2025
img
ভোটকেন্দ্র সংস্কারে ১১১ কোটি টাকা চায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর Sep 01, 2025
img
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ওসমানীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ Sep 01, 2025
img
দ্রুত একটা নির্বাচন দিয়ে ড. ইউনূসের চলে যাওয়া উচিৎ : ইলিয়াস Sep 01, 2025
img
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন Sep 01, 2025
img
জুলাই গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Sep 01, 2025
img
আগস্টের ৩০ দিনে রেমিট্যান্সশূন্য ৯ ব্যাংক Sep 01, 2025
img
সুপার স্পাই খ্যাত অজিত দোভালকে নিয়ে নতুন বিতর্ক Sep 01, 2025
img
‘কিছু বিক্রি হয়ে গেলে সেটা তারই হয়’, প্রিন্স মামুনের সেলুন প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস Sep 01, 2025
img
হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করল বাকৃবি শিক্ষার্থীরা Sep 01, 2025
img
দেশে স্বর্ণ ও রুপার আজকের বাজারদর Sep 01, 2025
img
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত বেড়ে ২৫০ Sep 01, 2025
img
আর্সেনালকে ১-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষে লিভারপুল Sep 01, 2025