ডাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র, নারী হেনস্তা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে অব্যাহত মিথ্যাচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) নগরের মুরাদপুর থেকে শুরু হয়ে ২ নম্বর গেট এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এতে ছাত্রশিবিরের মহানগর উত্তর সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করলে ছাত্রদল ছাত্রসমাজের কাছে চুনোপুঁটি ছাড়া আর কিছুই নয়। ছাত্রদলের ইতিহাস হচ্ছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নারী ধর্ষণ, দলীয় কোন্দলে নিজ ভাইকে হত্যা করার ইতিহাস। তাই অন্যদের ব্যাপারে কথা বলার আগে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখুন।
ছাত্রদলের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, যদি ক্যাম্পাসে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি করেন, তাহলে ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।
মহানগর দক্ষিণ শিবিরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন থেকেই ক্ষমতায় বসেছে, তখন থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ছাত্র সংগঠনের মদদ নয় বরং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের মাধ্যমে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করতে চাই। আমরা বলেছিলাম, খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, যাতে সরকার প্রমাণ করতে পারে এ সরকারের অধীনেই একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন সম্ভব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, সরকার মুখে নির্বাচনের কথা বললেও তাদের মদদপুষ্ট রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চলছে, তা স্পষ্ট। মুখে বলবেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, আর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় ব্যালট বাক্স হারিয়ে যাবে এই নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ হতে দেবে না। আপনি যদি ব্যালট বাক্স ছিনতাই ঠেকাতে না পারেন, যদি ডাকসুতে নির্বাচন দিতে না পারেন, তাহলে ধরে নেব আপনারা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনেও কোনো বিশেষ দলকে সুবিধা দিয়ে দেশে নতুন সহিংসতার পথ তৈরি করছেন।
ছাত্রশিবিরের সর্বস্তরের জনশক্তির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার ফেসবুক থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জায়গায় আপনাকে সংযত থাকতে হবে। আপনি যদি সংযত ভূমিকা পালন করতে পারেন, তবে এই সময়ে আমাদের বিরুদ্ধে যেই ন্যারেটিভ দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে তারা টিকবে না।
চবি শিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, জরিপ করে দেখুন, আপনার আশপাশের মা-বোনদের জিজ্ঞেস করুন ছাত্রশিবিরের কোনো ভাই ইভটিজিং করে কি না। তারা সহজেই বলে দিবে, বাংলাদেশে এমন কোনো সংগঠন যদি থেকে থাকে যারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে কথা বলে, যারা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, তারা হলো ছাত্রশিবির।
তিনি আরও বলেন, আমি সবার কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই যেসব অন্যায় ও অপরাধ ক্যাম্পাসগুলোতে সংঘটিত হচ্ছে, তা আপনারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিহত করুন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করুন।
এমকে/এসএন