নিবেদতিপ্রাণ করোনা চিকিৎসকের গল্প, বাসা নয় রাতে থাকছেন হোটেলে!

মহামারী করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন বৃহত্তর রংপুরের কৃতি সন্তান ডাঃ আবু বকর সিদ্দিক। হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন। বাসা ছেড়ে দিয়ে উঠেছেন হোটেলে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিবার ছেড়ে হোটেলে নিঃসঙ্গ রাত কাটে তার। এক টার্ম ডিউটি শেষে যেতে হচ্ছে আইসোলেশনে। করতে হচ্ছে করোনা পরীক্ষা। এভাবেই তিনি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

জানা গেছে, ডাঃ আবু বকর সিদ্দিকের জন্ম কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার সরকার পাড়া গ্রামের কৃষক পরিবারে। তার জীবনের বড় অংশটা কেটেছে রংপুর শহরে। ১৯৮৮ সালে রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৯০ সালে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন এই মেধাবী ছাত্র। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হয়ে মানবসেবা করার। সেই স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর তিনি আর্থিক টানাটানিতে পড়ে যান। টিউশনি করেই নিজের এমবিবিএস পড়ার খরচ যুগিয়েছেন তিনি। এমবিবিএস পাশের পর বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে চান্স পান। যোগ দেন মিঠাপুকুর ইমাদপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এরপরে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হয় সরকারি চাকরির নিয়ম মেনে। এর ফাঁকেই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্যাস্ট্রএন্টেরোলজি (Gastroenterology) তে এমডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে ডাঃ আবু বকর সিদ্দিক সহকারি অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। এখানেই কোভিড - ১৯ আক্রান্তদের সেবার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নিজে PCI (Two stents in the heart) with Hypertension with Diabetes রোগী হওয়া সত্ত্বেও রোস্টার অনুযায়ী কোভিড রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য থাকতে হচ্ছে পরিবার থেকে দূরে। দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে আবাসিক হোটেলে থেকে। এক টার্ম ডিউটি শেষে যেতে হচ্ছে আইসোলেশনে, করতে হচ্ছে করোনা পরীক্ষা।

জানা গেছে, ডাঃ আবু বকর সিদ্দিকের সহধর্মিণী শামীমা জাহানও একজন চিকিৎসক। বর্তমানে জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে আছেন মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেসে। দুই সন্তানকে নিয়ে তাদের সংসার। করোনাকালে নিজ পরিবার ও সন্তানদের থেকে দূরে থেকে তিনি কোভিড আক্রান্তদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।

 

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফরীদি চেয়েছিলেন শিল্পীসত্তা বাঁচিয়ে রাখতে : আফজাল হোসেন Oct 17, 2025
img
সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনেও ছাত্রশিবিরের দাপট Oct 17, 2025
img
জুলাই সনদ: জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গাড়ি ভাঙচুর Oct 17, 2025
img
ছাঁটাই হলেন প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট Oct 17, 2025
img
রাজধানীতে ৫০০ ভরি স্বর্ণ লুটের রহস্য উদঘাটন Oct 17, 2025
img
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে উত্তেজনা Oct 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির পথে সৌদি আরব Oct 17, 2025
img
এইচএসসির ফলাফলে ৩ বিষয়ে ফেল বেশি ! Oct 17, 2025
img
একফ্রেমে ধরা দিলেন শাকিব-ববি Oct 17, 2025
img
কিডনির যত্নে সতর্কতা, ভিটামিন ডি ব্যবহারে ভুল হলেই বিপদ Oct 17, 2025
img
পান মশলার বিজ্ঞাপন নিয়ে ফের সমালোচনার মুখে বলিউড বাদশা Oct 17, 2025
img
দেশে এখন সবকিছু গডফাদার কেন্দ্রিক হয়ে গেছে : গোলাম মাওলা রনি Oct 17, 2025
img
ত্রিপুরায় ৩ বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিবৃতি দিলো সরকার Oct 17, 2025
img
আত্মপ্রকাশ করলো ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’ সংগঠন Oct 17, 2025
img
তিন নায়িকার নামে জাল ভোটার কার্ড,তদন্তে নেমেছে নির্বাচন কমিশন Oct 17, 2025
img
কিছু রাজনৈতিক দলের জুলাই সনদে সই করার নাম জাতীয় ঐক্য নয়: নাহিদ Oct 17, 2025
img
নেপালের প্রথম এভারেস্টজয়ী দলের শেষ জীবিত সদস্য কাঞ্চা শেরপা আর নেই Oct 17, 2025
img
রাকসুতে ছাত্রদল প্যানেল থেকে একমাত্র বিজয়ী নার্গিস Oct 17, 2025
img
ভারত সিরিজের আগে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া Oct 17, 2025
img
শিক্ষার্থীদের রায়ই চূড়ান্ত, আপনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ : এষা Oct 17, 2025