ভারসাম্যহীন ওজন কমিয়ে দেবে আয়ু

দেহের ওজন অতিরিক্ত হ্রাস বা বৃদ্ধি পেলে তা আয়ু কমিয়ে দেবে। সম্প্রতি মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কারো ওজন আদর্শ এবং ভারসাম্যপূর্ণ ওজনের থেকে কম বা বেশি হলে তা জীবন থেকে চার বছর আয়ু কমাবে।

অনেকেই জানেন, ওজন অতিরিক্ত কমানো বা বৃদ্ধি কোনটাই স্বাস্থ্যকর নয়। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ সৃষ্টি করে।

তবে ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেহের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি হলে এটা দেহে গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যা ব্যক্তির জীবন প্রত্যাশা চার বছর পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত্যুর যেকোনো কারণের সঙ্গে দেহের ভর সূচক (বিএমআই) জড়িত। তবে কিছু গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, মৃত্যুর বিভিন্ন কারণের সঙ্গে দেহের ভর সূচকের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।

উল্লেখ্য, উচ্চতা এবং ওজনের ভিত্তিতে দেহে বিদ্যমান চর্বির পরিমাণ নির্দেশক সূচক হল “বডি মাস ইন্ডেক্স” বা বিএমআই। প্রকাশিত ওই গবেষণায় যুক্তরাজ্যের নিবন্ধিত দুই মিলিয়ন লোক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের ক্ষেত্রে দেহের ভরসূচক এবং মৃত্যুহারের সম্পর্ক শক্তিশালী।

আবার ৪০ বছরের পর থেকে স্বাভাবিক ওজনের লোকদের তুলনায় মোটা লোকদের জীবন প্রত্যাশা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪.২ বছর এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৩.৫ বছর কম। অনুরূপ অতিরিক্ত কম ওজনের লোকদের জীবন প্রত্যাশা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪.৩ বছর এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৪.৫ বছর কম।

গবেষণায় দেখা যায়, ৪০ বছর বয়সের পর থেকে যাদের দেহের ভর সূচক (বিএমআই) এর মান স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে তাদের রোগজনিত কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি কম।

ক্যান্সার, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগসহ পরিবহন সংক্রান্ত দুর্ঘটনা ছাড়া, মৃত্যুর সকল কারণের সাথে বিএমআই জড়িত বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

বিবিসি রিপোর্ট অনুযায়ী, গবেষণার সঙ্গে সম্পর্কিত গবেষক কৃষ্ণ ভাস্করণ বলেন, “তার মানে এই নয় যে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কেউই রোগজনিত মৃত্যুর সর্বনিম্ন ঝুঁকিতে নেই। তবে গবেষণা এটা প্রমাণ করছে যে, গ্রহণযোগ্য মানের চেয়ে কম বা বেশি মাত্রার বিএমআই মৃত্যুহার বৃদ্ধির জন্য দায়ী”।

 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে লিখেছেন এনামুল হক।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপি খালেদা জিয়ার দল, তারেক রহমানের দল: রুমিন ফারহানা Jul 19, 2025
img
তদবির নয়, এবার বিচারপতি নিয়োগে কাঠামোগত পরিবর্তন Jul 19, 2025
img
সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে উইমেন্স ইউরোর সেমিফাইনালে স্পেন Jul 19, 2025
img
ড্রোন ও এআই অস্ত্র নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করবে যুক্তরাজ্য-জার্মানি Jul 19, 2025
img
স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ২৫ কেজি দুধে স্নান করলেন হৃদয় মিয়া Jul 19, 2025
img
হাই অল্টিটিউড ম্যাচে কতটা প্রস্তুত জামালরা? Jul 19, 2025
img
সমর্থক গ্রেফতারে শীর্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড Jul 19, 2025
img
সরকারই উসকানি দিয়ে এনসিপিকে গোপালগঞ্জ পাঠিয়েছে : এলডিপি মহাসচিব Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশ সরকারের কাজের প্রশংসা করলেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট Jul 19, 2025
img
কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের লোক ছাত্রদের দল গঠনের বুদ্ধি দিয়েছে : অলি আহমদ Jul 19, 2025
img
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ চায় না বিএনপি Jul 19, 2025
হলফনামায় শেখ হাসিনার মি'থ্যা তথ্য, ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই ইসির Jul 19, 2025
img
মুজিববাদের কবর দিতে গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার নেই : এ্যানি Jul 19, 2025
বাংলাদেশে স্টারলিংক কার্যক্রমে সরকারকে ‘নজিরবিহীন’ বললো স্পেসএক্স Jul 19, 2025
‘হিরোস উইদাউট কেপস’ ডকুমেন্টারি: জুলাই আন্দোলনের প্রামাণ্য চিত্র Jul 19, 2025
img
জামালপুরে যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশে স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে চালু, রিসেলার বিএসসিএল Jul 19, 2025
img
দলীয় উন্নয়নেই মনোযোগ, আজও দ্বিতীয় সারির দল পাঠাবেন বাটলার Jul 19, 2025
img
পাকিস্তানের ইরানি দূত এখন এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড Jul 19, 2025
img
এসি মিলানে মডরিচ, ফিরে গেলেন ছোটবেলার প্রেমে Jul 19, 2025