প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ অ্যালোভেরা, বাংলায় যাকে বলে ঘৃতকুমারী। ঔষধি গুণাগুণের জন্য কণ্টকধারী সবুজ এই ছোট উদ্ভিদের বেশ কদর রয়েছে। অ্যালোভেরা একদিকে যেমন বাড়ায় বাইরের সৌন্দর্য, অন্যদিকে ভেষজ এই উদ্ভিদের রয়েছে নানা পুষ্টিগুণও।
শরীরে নানা প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিতে আর অসুখ-বিসুখ সারিয়ে তুলতে অ্যালোভেরা অতুলনীয়। এই উদ্ভিদ খাদ্য-পানীয় হিসেবে যেমন কার্যকর, তেমনি তা বাহ্যিকভাবেও ব্যবহারযোগ্য।
পুষ্টিবিদদের মতে, অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজের এক সমৃদ্ধ উৎস। ভিটামিন-এ,সি ও ই, ফলিক অ্যাসিড, কোলিন, বি-১, বি-২, বি-৩ (নিয়াসিন) ও ভিটামিন বি-৬ এর দারুণ উৎস এটা।
অল্পসংখ্যক উদ্ভিদের মধ্যে অ্যালোভেরা একটি, যাতে ভিটামিন বি-১২ আছে। এছাড়াও এতে প্রায় ২০ ধরনের খনিজ আছে। এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাংগানিজ।
চলুন তাহলে জেনে নিই অ্যালোভেরা কি কি উপকারে আসছে আমাদের-
হজম প্রক্রিয়া: হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলী ঠাণ্ডা রাখে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি বা গুড়ের শরবতের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে খেলে এ উপকার পাওয়া যাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: আঁশযুক্ত বলে অ্যালোভেরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সহায়ক ভূমিকা রাখে। এর নির্যাস পাকস্থলী ভালো রাখে। ফলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে।
ডায়াবেটিস: যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত অ্যালোভেরা রস খেলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
চুলের যত্নে: চুলের শুষ্কভাব এবং ত্বকে চুলকানি দূর করার জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারবেন। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। তাই অ্যালোভেরা রসের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে চুলে লাগালে এতে চুলের উজ্জ্বলতাও বেড়ে যাবে।
ত্বকের যত্নে: বহু বছর ধরে ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। যে কোনো উপটান বা প্যাক অথবা সরাসরি এই জেল লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে এবং বয়সের ছাপ মুছে যায়।
ব্রণ নিরাময়ে: কেবল ত্বকের উজ্জ্বলতার মাধ্যমেই অ্যালোভেরার গুণকীর্তন শেষ হয়নি। অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যান্টি-ফ্লামেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের ব্রণ নিরাময়ে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে: ওজন কমাতে অ্যালোভেরার জুস অনেক বেশ কার্যকরী। অ্যালোভেরা জুসের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরের জমে থাকা মেদ দূর করে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
হার্ট ও দাঁতের যত্নে: অ্যালোভেরার জুস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে। এটি দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে দেয় এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও অ্যালোভেরা জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথা ও ইনফেকশন নিবারণে সহায়তা করে।
সতর্কতা:
টাইমস/জিএস