নাসা কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়াশিংটন ডিসির হেডকোয়ার্টারের নাম পাল্টে নাসার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ইঞ্জিনিয়ার ম্যারী জ্যাকসনের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে নাসার প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন বলেন, “জ্যাকসন ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গ গোষ্ঠী এবং নারীদেরকে বাঁধা ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে যাবার পথ দেখিয়েছেন।”
ম্যারী জ্যাকসনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের হ্যাম্পটন অঞ্চলে, তিনি ২০০৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৬ সালে ম্যারী জ্যাকসনের জীবনী নির্ভর ‘হিডেন ফিগার’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।
গেল বছর নাসা তাদের হেড কোয়ার্টারের সামনের রাস্তাটি ম্যারী জ্যাকসনের নামে নতুন করে নামকরণ করেছে। এ বিষয়ে ব্রাইডেনস্টাইন আরও বলেন, “আর হিডেন থাকবে না, আমরা ক্রমাগত নাসার সাফল্যের পেছনে নারী, কৃষ্ণাঙ্গসহ সবার অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করবো। জ্যাকসন খুব গুরুত্বপূর্ণ দলের সদস্য ছিলেন, যারা নাসাকে মহাশূন্যে নভোচারী পাঠাতে সহায়তা করেছেন।”
নাসার এই সিদ্ধান্তটি এমন সময় নেয়া হলো যখন যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান আমেরিকানরা তাদের স্বীকৃতি ও অধিকারের দাবিতে এবং তাদের সাথে ঐতিহাসিকভাবে হয়ে আসা অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। সম্প্রতি পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, যা ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
নাসা ১৯৪০ এর দশক থেকেই ‘হিউম্যান কম্পিউটার’ হিসেবে কলেজ পড়ুয়া আফ্রিকান আমেরিকান নারীদের রিক্রুইট করতে শুরু করে। তবে কর্মক্ষেত্রে সেসব নারী ক্রমাগত লিঙ্গ ও বর্ণ বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ম্যারী জ্যাকসনকে ১৯৫১ সালে রিক্রুইট করা হয়, তিনি ডরোথি ভোগানের অধীনে কাজ করেছেন। ২০১৯ সালে জ্যাকসনকে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মরণোত্তর কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
জ্যাকসনের কন্যা ক্যারোলিন লুইস তার মা ম্যারী জ্যাকসন সম্পর্কে বলেন, “তিনি ছিলেন একাধারে একজন মা, বিজ্ঞানী, মানব দরদী এবং একজন স্ত্রী, যিনি আরও হাজারো নারীর জন্য সফলতার পথ বাতলে দিয়ে গেছেন। তিনি শুধু নাসাতে নন, জাতীয় পর্যায়ে তিনি আমেরিকান নারীদের পথিকৃৎ।” তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ
টাইমস/এনজে/জিএস