লাদাখ সীমান্তে এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চীনা সেনা

লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা চলছে মাস দুয়েক। তবে গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের নির্যাতনে ভারতীয় ২৩ সেনা নিহতের ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে দফায় দফায় দুই দেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক ও কূটনৈতিক ভাবে সমঝোতার চেষ্টা চলে। আলোচনার ফলস্বরুপ উভয় দেশই সীমান্ত ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিতে সম্মত হয়।

কিন্তু এখন পর্যন্ত লাদাখ, প্যাংগং লেক ও গালওয়ান উপত্যকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চীনা সেনাবহর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এমনই খবর এসেছে। এছাড়া ভারতও সীমান্তে সেনা জমায়েত বাড়ানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।

ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, ভারত ও চীনের কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত বৈঠকের পরে সংঘাত থামলেও চীনা সেনারা পিছু হটেনি। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাবে চীন সম্মত হলেও কার্যত তারা এখনো সেনা সরিয়ে নেয়নি।

এই বিষয়টি ভারত ও চীনের পররাষ্ট্র বিভাগ থেকেও একরকম নিশ্চিত করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, কমান্ডার স্তরের বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্ত কার্যকরে উদ্যোগী হোক চীন।

তার মানে, ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে এটা স্পষ্ট যে, চীন এখনো কমান্ডার স্তরের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করেনি।

এদিকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইংরেজি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনে কূটনৈতিক পর্যায়েও জোর আলোচনা চলছে। এসব আলোচনা বেশ ফলপ্রস্যূও হয়েছে। কিন্তু চীন তলে তলে ঠিকই সীমান্তে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এতে নতুন করে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের সূত্রের বরাতে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-চীনের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আরও এক দফা আলোচনা হবে। আগামী সপ্তাহ অথবা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে কমান্ডার স্তরে ওই আলোচনা হতে পারে। এর আগে গত ১৪ জুলাই দুই দেশের মধ্যে কমান্ডার স্তরের শেষ বৈঠক হয়েছিল।

কিন্তু সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিল, উভয় দেশ সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেবে। কিন্তু চীন বৈঠকের সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত কার্যকর করেনি। বরং চীন লাদাখের গোগরা, হটস্প্রিং, প্যাংগং লেক এবং ডেপস্যাংয়ের সমতল এলাকায় সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে।

বিষয়টি জানতে পেরে ভারতের তরফে বলা হয়েছে, সংঘাত নিরসনে যে পদক্ষেপগুলো নেয়া দরকার চীন তার কোনোটিই নেয়নি। তারা পরিস্থিতিকে উস্কে দিতে চাইছে। যতক্ষন না চীন ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে, ততক্ষন সীমান্তে উত্তেজনা থাকবে।

তবে চীনের পররাষ্ট্র দপ্তর দাবি করেছে, ভবিষ্যতে যেকোনো বৈঠক অথবা কমান্ডার স্তরের আলোচনার মধ্যে দিয়েই পরস্পরকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। সীমান্ত ইস্যূতে পরস্পরের প্রতি আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে।

তবে চীনের এই মন্তব্যকে ভালো ভাবে নিতে নারাজ ভারত। ভারতের বিশ্লেষকদের দাবি, চীন সীমান্তে নিজের করণীয় পালন না করে, শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। যা শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রথম বাধা।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখুন: জামায়াত আমির Nov 17, 2025
img
চোখধাঁধানো ফ্রি-কিকে বাবার মতোই গোল সিরো মেসির Nov 17, 2025
img
অতীতেও রায় হয়েছে, বাস্তবায়ন তো হয়নি : সাজ্জাদ জহির চন্দন Nov 17, 2025
img
দক্ষিণী সিনেমায় ফিরছেন ‘বাজরাঙ্গি ভাইজানের’ মুন্নি Nov 17, 2025
img
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংঘর্ষ, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড Nov 17, 2025
img
এ রায় দেশের মানুষের ঐতিহাসিক বিজয় : শারমিন Nov 17, 2025
img
মৃত্যুদণ্ডই শেখ হাসিনার উপযুক্ত বিচার: আখতার Nov 17, 2025
img
আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে : নুরুল হক নুর Nov 17, 2025
img
মামুনের রায়ে আমরা সন্তষ্ট না, প্রয়োজনে আপিল করবো : শহীদ মুগ্ধের বাবা Nov 17, 2025
img

আইজিপির রায়ে অসন্তুষ্ট

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডে জুলাই প্রজন্মের বিজয় হয়েছে : ডাকসু ভিপি Nov 17, 2025
img
বহু বিতর্কের পর নীরবতা ভাঙলেন আফতাব শিবদাসানি Nov 17, 2025
img
চুক্তি অনুসারে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় Nov 17, 2025
img
২১ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে যান চলাচল সীমিত Nov 17, 2025
img
বাংলাদেশে রিকশা চালালেন, ফুচকা খেলেন আহাদ রাজা মীর Nov 17, 2025
img
সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে Nov 17, 2025
কুমিল্লায় বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হকের গণমিছিল Nov 17, 2025
শেখ হাসিনার রায়: কী বললেন শহীদ শ্রাবণ গাজীর পরিবার? Nov 17, 2025
img
‘মিস ইন্টারন্যাশনাল’-এ নিজের জন্য ভোট চাইলেন জেসিয়া Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনা ও কামালের ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড ঐতিহাসিক রায়: অন্তর্বর্তী সরকার Nov 17, 2025
img
হাসিনার রায় শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের বিজয়ের ঐতিহাসিক রায়: এবি পার্টি Nov 17, 2025