আদালতে দাঁড়িয়ে ‘শ্বেতাঙ্গই সেরা’ চিহ্ন দেখালেন ব্রেন্টন

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যার পরও কোনো অনুশোচনা ছিল না উগ্র ডানপন্থি হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টের। এত মানুষকে হত্যা করে তার বিন্দুমাত্র দুঃখবোধ তো ছিলই না বরং তিনি আদালতে দাঁড়িয়েও হাসছিলেন। এমনকি হাতকড়ায় বন্দী হাতের আঙুল দিয়ে এমন প্রতীক ফুটিয়ে তোলেন, যার অর্থ শ্বেতাঙ্গরাই সেরা। হাতকড়া পরিয়ে খালি পায়ে তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি এমন আচরণ করেন।

শনিবার স্থানীয় সময় সকালে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্টকে ক্রাইস্টচার্চ ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে হাজির করা হয়। বিচারক তাকে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতে যখন ব্রেন্টনকে হাজির করা হয়, তখন তার পরনে ছিল বন্দীদের সাদা পোশাক, হাতে হাতকড়া এবং খালি পা। তার ছবি তোলার সময় তিনি আলোকচিত্রীদের দিকে তাকিয়ে হাসছিলেন।

ছবি তোলার সময় ব্রেন্টন হাতকড়া পরা অবস্থায় ডান হাতের আঙুল দিয়ে ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্বের’ বর্ণবাদী প্রতীক দেখাচ্ছিলেন ব্রেন্টন।

ব্রিটিশ সংবাদপত্র মেট্রো এই ইঙ্গিতের ব্যাখ্যা করে বলেছে, এর মাধ্যমে ব্রেন্টন শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠত্বের কথা বুঝিয়েছেন। মানুষের মধ্যে শ্বেতাঙ্গরা সেরা—এমনটা যারা মনে করেন, তারা আঙুলের মাধ্যমে বিশেষ চিহ্ন তৈরি করে প্রতীক হিসেবে তার প্রকাশ ঘটিয়ে থাকেন। ব্রেন্টন বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনী মিলে বৃত্ত তৈরি করেন। এটি দেখতে ‘পি’ আকৃতির, যা পাওয়ার বা শক্তি বুঝিয়ে থাকে। বাকি তিনটি আঙুল এ সময় ‘ডব্লিউ’–এর রূপ নেয়, যা দিয়ে শ্বেতাঙ্গদের বোঝানো হয়। অর্থাৎ, হোয়াইটের আদ্যক্ষর। এই প্রতীকের অর্থ দাঁড়ায়—সাদা চামড়ার লোকজনই সেরা। ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন বন্দী হওয়ার পরও তার বর্ণবাদী মনোভাব এভাবে তুলে ধরেন।

ব্রেন্টন শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে জুমার নামাজ চলাকালে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। দুই মসজিদে হামলায় প্রাণ হারান ৪৯ জন। এর মধ্যে আল নুর মসজিদে ৪১ জন ও লিনউড মসজিদে সাতজন নিহত হন।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এসি রুমে বসে রাজনীতি করার আর সুযোগ নেই : হান্নান মাসউদ Jul 15, 2025
img
বাংলাদেশে বিনিয়োগে মিশরীয় উদ্যোক্তাদের আহ্বান রিজওয়ানা হাসানের Jul 15, 2025
img
ঘরের মাঠে মাত্র ২৭ রানে গুটিয়ে লজ্জায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ Jul 15, 2025
img
আজ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে ঢাকার আকাশ Jul 15, 2025
img
জার্মানি আবারও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে: দিমিত্রি পেসকভ Jul 15, 2025
img
রুশ তেল আমদানিকারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের Jul 15, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান ১৯তম Jul 15, 2025
img
টাকা চুরির পর বাড়ির কাজের লোক আমাকে দেয়ালে চেপে ধরে: কাশিশ Jul 15, 2025
img
গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরও ৭৮ জন নিহত Jul 15, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ১৩ অঞ্চলে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 15, 2025
img
ই-কমার্স ও ক্রাউডফান্ডিংয়ে প্রতারণার ফাঁদ, সতর্ক করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক Jul 15, 2025
img
গৃহশ্রমিকের অধিকার নিশ্চিতের দাবি, পৃথক আইন প্রণয়নের তাগিদ Jul 15, 2025
img
জামালপুরে অটোরিকশা চালককে মারধর করায় বিএনপি নেতার সদস্য পদ স্থগিত Jul 15, 2025
img
১৪ জুলাই স্মরণে জাবি শিক্ষার্থীদের প্রতীকী প্রতিবাদী মিছিল Jul 15, 2025
img
১০০তম টেস্টে স্টার্কের ৪০০ উইকেট, ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় অস্ট্রেলিয়ার Jul 15, 2025
img
ভৈরবে বাসচাপায় প্রাণ গেল ২ জনের Jul 15, 2025
img
সিলেটে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Jul 15, 2025
img
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কার Jul 15, 2025
img
বগুড়ায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের Jul 15, 2025
img
রাজধানীর সূত্রাপুরে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, প্রাণ গেল ১ শিশুর Jul 15, 2025