‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়ে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ভারতের ঝাড়খণ্ডে এক মুসলিম যুবককে(২৪) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় তাকে টানা ১৮ ঘণ্টা একটি ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বেঁধে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম’ বলানো হয়।

এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে।  মোবাইলে তোলা ভিডিও দেখা যাচ্ছে, কালো টি-শার্ট, খাকি প্যান্ট পরা যুবককে কারা যেন বলছে, ‘বল, জয় শ্রীরাম! বল, জয় হনুমান!’

রোববার ঝাড়খণ্ডের ওই যুবক মারা গেছেন। মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে গত ১৮ জুন তাকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামের কিছু মানুষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেটাতে পেটাতে যুবককে তার নাম জিজ্ঞেস করে কয়েকজন। তিনি বলেন, সোনু। পুরো নাম বলতে বলা হয়। উত্তর আসে, শামস তাবরেজ।

মুসলিম জানা মাত্রই অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার নির্দেশ। ঘটনাচক্রে, রোববারই মার্কিন সরকারের প্রতিবেদন খারিজ করে নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত।

ইন্টারনেটে এই ঘটনার একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তারমধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে, শামস তাবরেজকে পেটাতে পেটাতে লাঠিই ভেঙে যাচ্ছে একজনের। বুকফাটা আর্তনাদ করছেন তবরেজ। অনেক পরে পুলিশ এসে তাবরেজকে উদ্ধার করে চুরির দায়ে কোর্টে তোলে। কোর্ট পাঠায় জেল হেফাজতে। রোববার অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শামস তাবরেজকে। সেখানে তিনি মারা যান।

সমাজকর্মীদের যদিও অভিযোগ, হাজতে মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে।

শামস তাবরেজের পরিবার বলছে, পুনাতে ঝালাইমিস্ত্রির কাজ করতেন ২৪ বছরের ওই যুবক। বাড়ি এসেছিলেন ঈদ উপলক্ষে। ১৮ তারিখে আরও দু’জনের সঙ্গে জামশেদপুর যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তিনি।

ভিডিওতে শোনা গেছে, তাবরেজ বলছেন, ওই দু’জন তাকে একটি মোটরসাইকেলের সামনে অপেক্ষা করতে বলে গিয়েছিল। পরে দু’জনই পালায়।

পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাপ্পু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এফআইআরে।

২০১৬ সাল থেকে এই নিয়ে ১৩ জনকে পিটিয়ে মারা হলো ঝাড়খণ্ডে। এর প্রায় প্রত্যেকটি ঘটনাতেই আঙুল উঠেছে হিন্দুত্ববাদী বা গোরক্ষকদের দিকে।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: