বগুড়া শহরের সাতমাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে হামলা করেছে তাকে ‘হালকা ধাক্কাধাক্কি’ বলে দাবি করছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি।
রোববার বিকেলে অ্যাডওয়ার্ড পার্কে উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরির সামনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হামলায় ভিপি নুরসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আহত অন্যরা হলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাসুল ও বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের ভিডিওগ্রাফার শাহনেওয়াজ শাওন। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।
ভিপি নূরকে প্রথমে বগুড়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক বলেন, গ্রন্থাগারের কাছেই আজকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। কিন্তু এর মধ্য গ্রন্থাগার চত্বর থেকে চিৎকারের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এই কারণে ছাত্রলীগের সদস্যরা সেখানে গিয়ে দেখেন, গ্রন্থাগার চত্বরে ভিপি নুর এসেছেন। এই সময়ে ভিপি নুরের সঙ্গে হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আর সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়টি দুঃখজনক।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল যোগ দেওয়ার জন্য ভিপি নুরুলসহ ১৮ জন ঢাকা থেকে শনিবার বিকেলে বগুড়ায় আসেন।
উডবার্ণ সরকারি গ্রন্থাগার মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তবে দুপুর দুইটার দিকে শহরের স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজ হাসান নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে এখানে কোনো অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেন।
পরিদর্শক মোস্তাফিজ হাসান নিষেধ করার পর পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সদস্য এসে তাদের অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেন। এরপর তারা অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য ভেন্যু নিয়ে আলোচনা করছিলেন।
বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ভিপি নুর ১৮ জনের একটি দল নিয়ে উডবার্ণ সরকারি গ্রন্থাগার চত্বরে আসেন। তবে পুলিশের লিখিত অনুমতি না থাকায় সেখানে অনুষ্ঠানের বাধা দেন সহকারী লাইব্রেরিয়ান রাজু আহম্মেদ।
তার সাথে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলেন নুর। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বগুড়া ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি দল গ্রন্থাগার চত্বরে প্রবেশ করেন। এরপর কোনো কথা বলার আগেই বগুড়া আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ ভিপি নুরকে ঘুষি মারেন।
এরপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নুরের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। মারপিট চলার সময় ভিডিও ধারণ বন্ধের হুমকি দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ফটোগ্রাফারকেও মারধর করেন ছাত্রলীগের সদস্যরা।
সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা চলে যাওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ভিপি নুরকে গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকে ফেলে পেটান। এতে নূর অজ্ঞান হয়ে গেলে ভিপি নুরকে রিকশায় তুলে দেন ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রউফ। এরপর দলীয় স্লোগান দিতে দিতে ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা দূরে টিটো মিলনায়তনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইফতার মাহফিলে যোগ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
টাইমস/জেডটি