পাবনায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর মামলা না নিয়ে থানায় এক আসামির সঙ্গে বিয়ে দেয়ার ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর একই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) একরামুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এসব সিদ্ধান্ত নেন।
এ ঘটনায় হাইকোর্ট নজর রাখছেন বলে জানানোর একদিন পরই এই ব্যবস্থা নেয়া হলো। বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চে এ ঘটনার প্রকাশিত খবর তুলে ধরে সদর থানার ওসির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে স্বপ্রণোদিত আদেশ চান সুপ্রিমকোর্টের তিন আইনজীবী। তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘মিডিয়ার মাধ্যমে আমরাও বিষয়টা নজরে রাখছি।’
এ বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশমতে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যজনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- প্রধান আসামি রাসেল (২৬), শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টু (৪৫), গাড়ির চালক হোসেন আলী (৩৫) এবং সঞ্জু (২৭)। অপর আসামি ওসমান (৩৫) পলাতক।
ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ থানায় যান। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে পরদিন তার সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজনের বিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর ৭ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের মামলা নেয় পুলিশ।
এজাহারে ওই নারী অভিযোগ করেন, পাবনা সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক হওয়ায় ২৯ আগস্ট তিনি স্বামীর সংসার ছেড়ে রাসেলের কাছে চলে আসেন। রাতে রাসেল তাকে গ্রামের এক পুকুরপাড়ে নিয়ে ওসমানের সহযোগিতায় হোসেন আলীকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য ৩১ আগস্ট রাসেল তাকে টেবুনিয়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলামের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তিন দিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
টাইমস/এসআই