বিষাক্ত ধোঁয়াশায় দিল্লিতে স্কুল বন্ধের নির্দেশ

ঘর থেকে বের হলেই জ্বলছে চোখ। বেশিক্ষণ বাইরে থাকলে শুরু হচ্ছে প্রবল কাশি, সঙ্গে বাড়তি উপসর্গ হিসেবে গলা বসে যাচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও বেশ কিছু দিন আগে থেকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ নানাভাবে সক্রিয় হলেও লাভের লাভ যে কিছু হয়নি, তা স্পষ্ট ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির দূষণচিত্র থেকেই।

নয়াদিল্লিতে বাতাসের ভয়ানক এই দূষণের কারণে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর সব স্কুল বন্ধ রাখাসহ আশপাশের এলাকায় সবরকম নির্মাণকাজও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জানুয়ারির পর এই প্রথম দিল্লিতে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। দূষণের পরিভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘সিভিয়ার প্লাস’। এ কারণেই ঘোষণা করা হয়েছে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা।

বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনুকূল বলে ধরা হয়। কিন্তু এবার ভারতে সদ্য হয়ে যাওয়া দীপাবলি উৎসবে বাজি ফোটানোর কারণে বিষাক্ত গ্যাসে দিল্লি ও নয়ডার গড় একিউআই বেড়ে ৩০৬ ও ৩৫৬ -তে দাঁড়িয়েছিল। শুক্রবার রাজধানীতে তা ৫০০ ছাড়িয়েছে। আর সূচক এ সীমা অতিক্রম করলেই তা ‘সিভিয়ার প্লাস’।

এ পরিস্থিতিতে কয়েকটি কোম্পানি তাদের কর্মচারীদেরকে দূষণ থেকে বাঁচতে ঘরে থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে।

ভারতের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বলছে, “দূষণের এই ভয়াবহ মাত্রা আমাদের সবার স্বাস্থ্যেই বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। একথা বিবেচনা করেই জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার মত পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।”

পরিবেশ দূষণ (প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) সংস্থার চেয়ারম্যান ভুরে লাল বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোরালো। আমি সংলগ্ন সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখে নাড়া পোড়ানো বন্ধে নজরদারি বাড়াতে বলেছি। এই সময়ে বাইরে ব্যায়াম, প্রাতর্ভ্রমণ আপাতত কিছু দিন বন্ধ রাখা উচিত।’’

এমন পরিস্থিতির হাত থেকে বাঁচতে পরিবেশবিদরা বলছেন, প্রবল পশ্চিমী হাওয়া অথবা ভালো রকম বৃষ্টি ছাড়া এই দূষণের চাদর সরবে না।

এই দূষণের পুরো দায় পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর ওপরে চাপিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, 'হরিয়ানার খট্টর ও পাঞ্জাবের ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র দু’জনে নিজেদের রাজ্যে চাষিদের বাধ্য করছেন ফসলের গোড়া পোড়াতে। যাতে দিল্লিবাসী দূষণের শিকার হয়।'

জবাবে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, 'অহেতুক অন্যের দিকে আঙুল না তুলে কেজরিওয়াল বরং নিজে দূষণ কমাতে এগিয়ে আসুন।'

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: