খরচ কমিয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে কৃষিযন্ত্র ক্রয়ের ওপর ভর্তুকির ১০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে সরকার। করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বোরো মৌসুমে ধানকাটা শ্রমিকের সঙ্কট লাঘবের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুকূলে ভর্তুকির এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল কৃষি মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল গণভবন থেকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যম ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে যান্ত্রিকীকরণের জন্য অতিরিক্ত ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত আদেশে বলা হয়েছে, এই অর্থ থেকে হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য চলতি অর্থবছর যন্ত্রমূল্যের ওপর ৭০ শতাংশ হারে এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকরা যন্ত্রের ক্রয়মূল্যের ওপর ৫০ শতাংশ হারে ভর্তুকি পাবেন।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের চলতি অর্থবছরের সংশোধিত পরিচালন বাজেটে কৃষি ভর্তুকি আট হাজার কোটি টাকা থেকে কৃষি উৎপাদন ব্যয় হ্রাসকরণ এবং ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে চলতি অর্থবছরে কৃষকের যন্ত্র ক্রয়মূল্যের উপর উন্নয়ন-সহায়তা (ভর্তুকি) প্রদানে কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন-সহায়তা বাবদ ১০০ কোটি টাকা দিতে অর্থ বিভাগ কর্তৃক সম্মতি প্রদান করেছে।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনায় ভর্তুকির ১০০ কোটি টাকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুকূলে ছাড় করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এরপরই কৃষি মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
আদেশে বলা হয়েছে, ভর্তুকির এই ১০০ কোটি টাকা থেকে বিগত বছরের কোনো দাবির অর্থ সমন্বয় করা যাবে না। এছাড়া কৃষকের যন্ত্র ক্রয়মূল্যের ওপর ভর্তুকি প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে নিশ্চিত হয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ অর্থ ব্যয় করতে পারবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প, স্কিম ও অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে দ্বৈততা পরিহার করতে হবে। সেই সঙ্গে ছাড় করা অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
এছাড়া ভর্তুকির ১০০ কোটি টাকা যথাযথ নিয়মে পরিশোধ করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের কাছে চূড়ান্ত নিরীক্ষিত হিসাব দিতে হবে। অব্যয়িত অর্থ চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে ওই আদেশে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের সঙ্কটের মধ্যেও কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেন।
টাইমস/এসএন/এইচইউ