“হয়তোবা খুব শীঘ্রই কাঙ্ক্ষিত চাকরি পেয়ে যাবে, বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্নে বিভোর থেকে প্রচণ্ড কষ্টে দিনাতিপাত করতে থাকে ছেলেগুলো। কিন্তু চাকরির আর ডাক পড়ে না।”
বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্টে কথাগেুলো লিখেছেন রাজধানীর পল্লবী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী। অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে কাজের সন্ধানে এসে প্রতারণার শিকার তিন যুবক ও প্রতারণা চক্রটির বিষয়ে জানিয়ে পোস্টটি দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে টাইমস- এর পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন,‘“বাবা মায়ের মমতা মাখা চিন্তিত মায়াবী মুখগুলো দেখতে রাসেল, আল আমিন আর ফরহাদের খুব কষ্ট হত। তাই অভাবের সংসারে কিছুটা অবদান রাখার জন্য এসএসসির গন্ডি না পেরোনো ছেলেগুলো অল্প বয়সেই খুঁজতে থাকে কাজ।
এরই মধ্যে অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে কুমিল্লার চান্দিনা থেকে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে আসে ছেলেগুলো। লোভনীয় বেতনে সিকিউরিটি কোম্পানির সুপার ভাইজার পদে চাকরির জন্য প্রদত্ত বিজ্ঞাপন মোতাবেক পল্লবী থানাধীন “আরভিটা সিকিউরিটি সার্ভিস লি.” এ যোগাযোগ করে তারা।
শুরুতেই ট্রেনিং, থাকা খাওয়া বাবদ প্রতি জনে ৪০০০ টাকা করে নিয়ে নেয় কথিত সিকিউরিটি কোম্পানি। কিন্তু ট্রেনিং তো দূরের কথা একবেলা ঠিকমত খেতে না পেয়ে ও গাদাগাদি করে কোনরকম রাতযাপন করতে থাকে রাসেলরা।
হয়তোবা খুব শীঘ্রই কাঙ্ক্ষিত চাকরি পেয়ে যাবে, বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্নে বিভোর থেকে প্রচণ্ড কষ্টে দিনাতিপাত করতে থাকে ছেলেগুলো। কিন্তু চাকরির আর ডাক পড়ে না।
একবেলা খেয়ে আর কতদিন থাকা যায়! এদিকে চাকরীর কোন খবর নেই। ক্রমশই ধুসর হতে থাকে তাদের সোনার স্বপ্নগুলো। অবশেষে বুঝতে পারে তারা প্রতারণার শিকার। পালিয়ে এসে বিস্তারিত জানায় পল্লবী থানায়।
চাকচিক্য অফিস, সুন্দরী রিসিপসনিস্ট আর চটকদার বিজ্ঞাপনকে পুঁজি করে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এ এক নতুন প্রতারণার কৌশল আবিষ্কার করেছে (ছবিতে) সানোয়ার, জুনায়েদ, খায়ের, গনি, রানা, পারভেজ, জুনায়েদ ও নাঈমা গং। ওদের টার্গেট নিম্নবিত্ত আর টাকার অংক তুলনামূলক কম। এমনটার উদ্দেশ্য হল যাতে কেউ আইনের আশ্রয় না নেয়।
এসআই সজীব খান সকলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। শুধুমাত্র চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আর লোভনীয় বেতনের কথিত আশ্বাসে প্রতারিত না হওয়ার জন্য সবাই সতর্ক থাকবো। আর যদি প্রতারিত হয়েই যাই তবে বিনা সংকোচে আইনের আশ্রয় নেব।”
টাইমস/এইচইউ