ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল না খারাপ?

ডিম স্বাস্থ্যকর, এমনটাই প্রচলিত বিশ্বাস। তাই নিজের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে বা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে নিয়মিত ডিম খেতে পছন্দ করেন অনেকেই।

একটি ডিমে প্রায় ৭৫ ক্যালোরি, ৭ গ্রাম উন্নতমানের আমিষ, ৫ গ্রাম ফ্যাট ও ১.৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এছাড়াও এতে আইরন, ভিটামিন, মিনারেল ও রোগ প্রতিরোধী লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন বিদ্যমান।

সব থেকে বড় কথা হলো ডিম একটি সহজ লভ্য খাবার, যা বিশেষ করে স্বল্প বাজেটের মধ্যে আমিষের চাহিদা পূরণে সহায়ক। কিন্তু সমস্যা নিহিত রয়েছে এর কুসুমে, যাতে প্রায় ১৮৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে।

তাই ডিম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল না খারাপ তা নিয়ে রয়েছে তীব্র মতভেদ। মজার বিষয় হলো স্বাস্থ্য বিজ্ঞানেও এর উত্তর স্পষ্ট ভাবে পাওয়া যায় না। কিংবা বলা যেতে পারে ভাল-খারাপের মাঝামাঝি এর অবস্থান।

সম্প্রতি পিএলওএস মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ডিম হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ৫ লক্ষ লোকের উপর পরিচালিত সমীক্ষা থেকে দাবি করা হয়েছে ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল নিয়মিত ডিম খাওয়ার অভ্যাস আছে এমন ব্যক্তিদের মৃত্যু ঝুঁকি ৭% পর্যন্ত বৃদ্ধি করে।

তবে, গত বছর হার্ভাড ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণায় বলা হয়েছিল নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বা প্রতিদিন একটি ডিম খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে না। এই গবেষণায় প্রায় ২.৫ লক্ষ লোকের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট রিয়াজ পাটেল বলেন, “কয়েক দশক ধরে গবেষণার পরেও এই বিষয়ে কোনও সুরাহা হয়নি, গবেষণার ফলগুলি পরস্পর বিরোধী। কোনটি বলছে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ডিম খাওয়া ভাল, আবার কোনটি বলছে এর ক্ষতিকর দিক থাকতে পারে। এই গবেষণাটি যথাযথ ভাবেই করা হয়েছে, তবে ফলাফলে বিতর্ক আরও বাড়ল।”

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে ডিম তাদের স্বাস্থ্যের উপর তুলনামূলক ভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ২০২০ সালে প্রকাশিত হার্ভার্ডের গবেষণায় বলা হয়েছে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুকি নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে অনেকটাই বেড়ে যায়।

ডিমের হলুদ অংশে কিছু অপকারিতা থাকলেও ডিমের সাদা অংশ তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি উপকারি। এটি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি ৩ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে সক্ষম। তবে খুব বেশি সংখ্যক লোক ডিমের হলুদ অংশ বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ গ্রহণ করেন না। তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: