প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সেরে ওঠার প্রক্রিয়া। কিন্তু কখনো কখনো প্রদাহ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এবং প্রয়োজনের থেকে বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। একে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বলা হয়। এর সাথে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার প্রভৃতি অন্য অনেক রোগের সম্পর্ক থাকতে পারে।
তবে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে প্রদাহের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতিতে এমন অনেক খাদ্য উপাদান রয়েছে যা গ্রহণের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই প্রদাহ মুক্ত হওয়া বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আসুন অতি উপকারী এই উপাদানগুলি সম্পর্কে জেনে নিই-
আদা
আমাদের অতি পরিচিত এই রসনা উপাদানটির ঔষধি গুণাগুণ সর্বজন স্বীকৃত। আদাতে জিনজেরোল, শোগাওল, জিনজিবেরেন, জিনজেরোন সহ শতাধিক সক্রিয় যৌগ বিদ্যমান। এইসব উপাদান প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এছাড়াও ঠাণ্ডা, মাইগ্রেন, আর্থ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বমি বমি ভাব প্রভৃতি সমস্যাতেও আদা অত্যন্ত কার্যকর।
রসুন
শত শত বছর ধরে সংক্রমণ, কোষ্ঠকাঠিন্য, কফ, দাঁতে ব্যথা, আর্থ্রাইটিস প্রভৃতির চিকিৎসায় ভেষজ হিসেবে রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে বিদ্যমান অ্যালিসিন, ডাইলিল ডিসালফাইড, এস-অ্যালিলসিস্টেইন প্রভৃতি সালফার যৌগ প্রদাহনাশক হিসেবে ভূমিকা রাখে।
হলুদ
প্রদাহনাশক ভেষজ হিসেবে হলুদের পরিচিত সব থেকে বেশি। কারণ এতে রয়েছে কারক্যুমিন নামক শক্তিশালী প্রদাহনাশক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি। এছাড়াও এই ভেষজটিতে প্রায় ৩ শতাধিক সক্রিয় যৌগ রয়েছে।
গোল মরিচ
ঝালের জন্য সুপরিচিত গোল মরিচ তার ঔষধি গুণাবলির জন্যও অনন্য। প্রাচীনকাল থেকে এটি অ্যাজমা, ডাইরিয়া ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রিক সম্পর্কিত সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মূল সক্রিয় যৌগ ‘পিপারিন’ প্রদাহনাশক হিসেবেও বেশ কার্যকর।
গ্রিন টি
গ্রিন টি এক ধরণের ভেষজ চা যার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। কারণ স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকে গ্রিন টি’র জুড়ি মেলা ভার। এই ভেষজ চা পলিফেনল নামক এক প্রকার উপাদানে পরিপূর্ণ। পলিফেনল হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং এর পাশাপাশি এটি প্রদাহনাশক হিসেবেও উপকারী।
অন্যান্য উপাদান সমূহ
এছাড়াও দারুচিনি, এলাচি, জিনসেং ও রোজমেরিতে প্রচুর পরিমাণে প্রদাহনাশক উপাদান থাকে। এই সব ভেষজ উপাদান গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের দেহের অতিরিক্ত প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে প্রদাহনাশ ছাড়াও এই উপাদানগুলির আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।
ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এসব ভেষজ উপাদান অনেক উপকারী হতে পারে। তবে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তার বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
টাইমস/এনজে/এসএন