অতিরিক্ত বসে থাকার ফলে বা কম নড়াচড়া করলে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়, সেটা আমরা কমবেশি জানি। তবে, থমকে যাবার মতো খবর হলো জামা অনকোলোজিতে প্রকাশিত নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিক্ষণ বসে থাকার সাথে ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক রয়েছে।
ড. সুসান গিলক্রিস্ট এই গবেষণাপত্রটির লেখক এবং টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এমডি অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধের বিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বলেন, “এই গবেষণার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো অতিরিক্ত বসে থাকার সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক শনাক্ত করা সম্ভব হলো।”
তবে হালকা, নিয়মিত ৩০ মিনিটের মাঝারি বা জোরালো শারীরিক ক্রিয়াকলাপ (শরীরচর্চা) সেই ঝুঁকি কমিয়ে দিতে সক্ষম। গিলক্রিস্ট একটি বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের অনুসন্ধান থেকে এই বিষয়ে আরও জোরালো প্রমাণ পাওয়া গেল যে, বসে থাকার সময় কমানো এবং শরীরচর্চা অত্যন্ত জরুরি।”
২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চলা এই গবেষণায় প্রায় ৮ হাজার ভলেন্টিয়ার অংশগ্রহণ করেন, গবেষণার শুরুর সময় এদের কারোই ক্যান্সার ছিল না। গবেষণার স্বার্থে অংশগ্রহণকারীদের দেহে বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে তাদের কর্মতৎপরতা রেকর্ড করা হয়েছে। গবেষণা শেষে দেখা যায় বসে থেকে অভ্যস্ত বা বসে থাকতে হয় এমন কাজ-কর্মের সাথে জড়িত লোকেদের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্যান্সারের কারণে উচ্চ মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন।
পূর্ববর্তী গবেষণাগুলিতে দেখা গেছে যে, ৫০ শতাংশেরও বেশি ক্যান্সারজনিত মৃত্যু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বিধান যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং ধূমপান না করার মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ যোগ্য। কিন্তু, নতুন গবেষণার ফলে জানা যাচ্ছে যে, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের সাথে শারীরিক অনুশীলনও জরুরি।
গিলক্রিস্ট বলেন, “প্রতিদিন জীবনের ৩০ মিনিটের আন্দোলন (শরীরচর্চা বা ক্রিয়াকলাপ) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আপনার মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সহায়তা করতে পারে।”
বর্তমান সময়ে বহুলোক তাদের জীবন ও জীবিকার সূত্রে দিনের বেশির ভাগ সময় ডেস্কে বসে কাটান। সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবনের উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত বসে থাকা লোকদের অবশ্যই হাঁটাচলা ও শরীরচর্চা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তথ্যসূত্র: সিএনএন
টাইমস /এনজে/জিএস