খাদ্যরসিক বাঙালির অতিপ্রিয় ও সুস্বাদু সবজি সজনে। যার ডাঁটা, পাতা, ফুল কিছুই ফেলা যায় না। সজনের ইংরেজি নাম Drumstick এবং বৈজ্ঞানিক নাম Moringa Oleifera। এর উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ হলেও এ গাছ শীত প্রধান দেশ ব্যতীত সারা পৃথিবীতেই জন্মে।
এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। প্রায় সারা বছরই বার বার ফলন দেয়। গবেষকরা সজনে পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজনে গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।
পুষ্টিবিদরা পুষ্টির দিক দিয়ে সজনেকে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ আখ্যায়িত করে বলেন, এ গাছটি থেকে পুষ্টি, ঔষধিগুণ ও সারা বছর ফলন পাওয়া যায়। বাড়ির আঙিনায় এটি একটি ‘মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ’।
প্রতি ১০০ গ্রাম সজনে রয়েছে শক্তি কি. ক্যাল ৪৩ গ্রাম, পানি ৮৫.২ গ্রাম, আমিষ ২.৯ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, শর্করা ৫.১ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ৪.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৪ মি. গ্রাম, আয়রন ০.২ মি. গ্রাম, জিংক ০.১৬ মি. গ্রাম, ভিটামিন-এ ২৬ মি. গ্রাম, ভিটামিন-বি১ ০.০৪ মি. গ্রাম, ভিটামিন-বি২ মি. গ্রাম ০.০৪ এবং ভিটামিন-সি ৬৯.৯ মি. গ্রাম।
পুষ্টিবিদের মতে সজনে পাতা পুষ্টিগুণের আঁধার। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে একই ওজনের সজিনা পাতায় কমলা লেবুর ৭ গুণ ভিটামিন-সি, দুধের ৪ গুণ ক্যালসিয়াম এবং দুই গুণ আমিষ, গাজরের ৪ গুণ ভিটামিন-এ, কলার ৩ গুণ পটাশিয়াম বিদ্যমান।
বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, সজনে পাতায় ৪২% আমিষ, ১২৫% ক্যালসিয়াম, ৬১% ম্যাগনোসিয়াম, ৪১% পটাশিয়াম, ৭১% লৌহ, ২৭২% ভিটামিন-এ এবং ২২% ভিটামিন-সি সহ দেহের আবশ্যকীয় বহু পুষ্টি উপাদান থাকে।
এক টেবিল চামচ শুকনা সজনে পাতার গুঁড়া থেকে ১-২ বছর বয়সী শিশুদের অত্যাবশ্যকীয় ১৪% আমিষ, ৪০% ক্যালসিয়াম ও ২৩% লৌহ ও ভিটামিন-এ সরবরাহ হয়ে থাকে। দৈনিক ৬ চামচ সজনে পাতার গুঁড়া একটি গর্ভবতী বা স্তন্যদাত্রী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম।
ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, সজনে গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। আধুনিক বিজ্ঞানও এ ধারণাকে সমর্থন করে। সজনের কচি পড সবজি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। সজনের বাকল, শিকড়, ফুল, ফল, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ঔষধিগুণ আছে। সজনেকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
আসুন জেনে নেই এই সুপার ফুডের আরও কিছু ঔষধিগুণ-
টাইমস/জিএস