প্রতি বছর মশকবাহী ভয়ানক ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা বিশ্বজুড়ে বহুলোক আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। শুধু বাংলাদেশেই এবছর ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যে ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশেষত পৃথিবীর গ্রীষ্মমণ্ডল ও উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে এর প্রকোপ।
গবেষণা বলছে, ভাইরাসটি বর্তমানে এমন সব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা একে টীকা ও চিকিৎসার বিরুদ্ধে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে।
পিএলওএস প্যাথোজেন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভাইরাসটির একটি বিশেষ প্রজাতি (DENV2) যখন মশার শরীরবৃত্তীয় ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেড়ে ওঠতে থাকে তখন এর পৃষ্ঠ কণাগুলি মসৃণ ও গোলাকার হয়।
গবেষক পেং-ইয়ং শি’র মতে, “মানুষের দেহের ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই কোমল পৃষ্ঠ কণাগুলি পরিবর্তনের মাধ্যমে অসমান হয়ে পড়ে।” শি যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সাস ইউনিভার্সিটির মেডিকেল শাখার প্রফেসর এবং উক্ত গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।
রূপান্তরের এই সক্ষমতা, ভাইরাসটিকে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। তাই টীকা ও চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকর উন্নয়নের স্বার্থে এই রূপান্তর প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানা প্রয়োজন বলে গবেষকরা মনে করেন।
গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক জিন-নি লিম বলেন, “আমরা ল্যাবরেটরিতে দেখেছি যে, বিকাশমান প্রজাতির এই ভাইরাসটির (DENV2) ই প্রোটিনের পরিবর্তনের ফলে এর পৃষ্ঠ কণাগুলি মসৃণ থেকে অসমতলে রূপান্তরিত হয়।”
গবেষকরা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভাইরাসটির গঠনগত পরিবর্তনের কারণে এর বিরুদ্ধে সব ধরনের টীকা এবং চিকিৎসা অকার্যকর হয়ে পরতে পারে।
যেসব গবেষক ল্যাবরেটরিতে রোগীদের শরীর থেকে সংগ্রহীত ভাইরাস (DENV2) নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন তাদের মতে, ল্যাবরেটরির ভাইরাস থেকে রোগীর দেহের ভাইরাসের আচরণে কিছুটা পার্থক্য আছে। রোগীর দেহের ভাইরাসগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অপরিবর্তিত থাকে। তবে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা অর্থাৎ জ্বরের তাপমাত্রায় ভাইরাসগুলি অসমতল পৃষ্ঠ প্রাপ্ত হয়। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
টাইমস/এনজে/জিএস